ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

মসজিদে শিশুদের নিয়ে আসার বিধান

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
ছবি- সংগৃহীত

শিশুদের মসজিদে নিয়ে আসা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক উদ্যোগ। ছোটবেলা থেকেই মসজিদে যাওয়া এবং নামাজে অংশগ্রহণের অভ্যাস শিশুমনে ঈমানি চেতনা ও নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে।

তবে এ বিষয়ে ইসলামী শরিয়তের কিছু নির্দেশনা ও সতর্কতা রয়েছে, বিশেষ করে তাদের ক্ষেত্রে যারা বয়সে খুব ছোট এবং এখনো মসজিদের আদব কিংবা নামাজের গুরুত্ব বোঝে না।

হাদিসের নির্দেশনা

ওয়াসিলা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন- ‘তোমরা তোমাদের মসজিদকে অবুঝ শিশু ও পাগলদের থেকে দূরে রাখো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৭৫০)

এই হাদিসের আলোকে অনেক ওলামায়ে কেরাম বলেন, এমন ছোট শিশুদের মসজিদে আনা অনুচিত, যারা মসজিদের মর্যাদা ও নামাজের আদব বোঝে না। কারণ, তাদের আচরণে মুসল্লিদের ইবাদত বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

শিশুদের আচরণ ও সতর্কতা

অনেক সময় দেখা যায়, শিশুরা মসজিদে এসে চেঁচামেচি, দৌড়াদৌড়ি কিংবা অপ্রাসঙ্গিক আচরণ করে। কেউ কেউ এমনকি মসজিদের ভেতরে মলমূত্র ত্যাগ করতেও পারে, যা মুসল্লিদের জন্য চরম বিড়ম্বনার কারণ হয়। তাই শিশুদের মসজিদে আনার ক্ষেত্রে মা-বাবা ও অভিভাবকদের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।

কাতারে শিশুদের অবস্থান

শিশু যদি একজন হয় এবং শান্ত থাকে, তাহলে তাকে বড়দের কাতারেই দাঁড় করানো যায়। এতে নামাজের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে শিশু একাধিক হলে, ইসলামী ফিকহ অনুযায়ী, তাদের জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের পেছনে আলাদা কাতার করা সুন্নাত।

তবে যদি দুষ্টুমি বা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে বড়দের কাতারেই তাদের রাখা যেতে পারে।

অনেকে মনে করেন, নাবালেগ শিশুদের বড়দের কাতারে দাঁড় করালে পেছনের মুসল্লিদের নামাজ বাতিল হয়ে যায় বা ত্রুটিযুক্ত হয়। বাস্তবে এটি সঠিক নয়। যদিও জামাতের আদর্শ নিয়ম হলো, প্রাপ্তবয়স্করা সামনে এবং নাবালেগরা পেছনে থাকবে, তবে ব্যতিক্রম হলে নামাজ শুদ্ধতায় কোনো প্রভাব পড়ে না।

শিশুদের মসজিদে আনার ক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দেশনার প্রতি যত্নবান হওয়া জরুরি। তাদের ইবাদতের পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া এবং উপযুক্ত বয়সে অভ্যস্ত করা মসজিদ-ভিত্তিক ইসলামি সমাজ গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হতে পারে।