হঠাৎ করে গত ১০ মে রাতে পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন এবং জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল একযোগে ব্লক করে দেয় ভারতের সরকার। আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকা সত্ত্বেও মোদি সরকার চুপিসারে তাদের চ্যানেলগুলো নিষিদ্ধ করে দেয়।
বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পিনাকি ভট্টাচার্য নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেন, ‘ভারত মাতা তার শত্রুদের চেনে। আর আপনারা বুঝে নিন বাংলাদেশের শত্রুরা আসলে কারা।’
এরপর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন লিখেন, পিনাকী ভট্টাচার্য, কনক সারওয়ার এবং জুলকারনাইন সামির ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করেছে ভারত৷ আমাদের তিন জনকে আলাদা ইমেইলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ভারত সরকারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা ভারতে আমাদের চ্যানেল বন্ধ করেছে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন এবং পত্রিকার ইউটিউব চ্যানেলও বন্ধ করে দিয়েছে ভারত।
তিনি লিখেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি। বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে তারাও যেন ভারতীয় চ্যানেলের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেন। ভারত যদি বাংলাদেশের চ্যানেল বন্ধ করতে পারে আমরা কেন আমাদের দেশে ভারতীয় চ্যানেল চলতে দিবো।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের লিখেন, কিছুদিন আগে তিনি একটি নতুন চ্যানেল খুলেছিলেন, যেখানে তিনি কোনো ক্ষতিকর পোস্ট করেননি, তবুও ভারত সেটি ব্যান করে দিয়েছে।
এখন শুধু ব্যক্তি নয়, টার্গেট হয়ে পড়েছে বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভারতীয় দর্শকদের জন্য একসাথে ব্লক করে দিয়েছে যমুনা টিভি, ৭১, বাংলাভিশন, মোহনা, ডিবিসি নিউজ, সময় টিভি–সবগুলো চ্যানেলের ইউটিউব চ্যানেল।
ভারত সরকার জানিয়েছে, এর পেছনে কারণ জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি একটি বিদেশী টিভি চ্যানেলের রিপোর্টে ভারতের জনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে, তাহলে সেই দেশের ভেতরে আসলে কতটা অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান?
তথ্য যাচাইকারী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিস ল্যাবের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় তথ্য মন্ত্রণালয় চাইলেই যেকোনো কন্টেন্ট ব্লক করতে পারে।
নেটিজেনদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উপর ভারতের আধিপত্য ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সোচ্চার সাংবাদিক ইলিয়াস, জুলকারনাইন সায়ের ও পিনাকী ভট্টাচার্য। এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে মোদি সরকার।
উল্লেখ্য, এর আগেও সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছিল, ভারতে তাদের ৮ হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে সরকারি নির্দেশনায়। এসব পদক্ষেপকে ঘিরে ভারতের গণমাধ্যম ও ডিজিটাল স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :