শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রহিম শেখ

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৫, ১২:২১ এএম

গতি ফিরেছে আর্থিক লেনদেনে

রহিম শেখ

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৫, ১২:২১ এএম

গতি ফিরেছে আর্থিক লেনদেনে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশের ব্যাংকগুলোয় অর্থ লেনদেনে যে ভাটা পড়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে ব্যাংক লেনদেনের প্রায় সব মাধ্যমে গতি ফিরেছে। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চেকের মাধ্যমে নগদ অর্থ লেনদেন ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে। আগে মাসের তুলনায় জানুয়ারিতে ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেন কিছুটা কমেছে। 

তবে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি), ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও বেড়েছে লেনদেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে অর্থ লেনদেনের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের ব্যাংকগুলোয় গত জুনে চেকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হয়েছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। জুলাইয়ে এ লেনদেন এক ধাক্কায় ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে। আগস্টে চেকের মাধ্যমে লেনদেন কমে নেমে আসে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকায়। 

সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছে আরও কম, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। অক্টোবরে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। নভেম্বরে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। 

এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনের প্রধান মাধ্যম আরটিজিএস। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে এ মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ডিসেম্বরে আরটিজিএস মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। 

জানুয়ারি মাসে আরটিজিএস মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা টাকা। লেনদেন ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে ইলেকটনিকস ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি)। ডিসেম্বরে ইএফটি ব্যবহার করে লেনদেন হয়েছিল ৭৫ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে এসে তা ৭৭ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। 

ইএফটি ব্যবহারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। নগদ অর্থ উত্তোলন ও লেনদেনের জন্য জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোর একটি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে এ দুটি মাধ্যমেও লেনদেন কিছুটা কমেছে। ডিসেম্বরে কার্ডভিত্তিক লেনদেন ছিল ৪৪ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। 

জানুয়ারি মাসে লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে লেনদেন কমেছে ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেড়েছে। ডিসেম্বরে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৯৮ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে তা বেড়ে ১ লাখ ৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকায় ওঠে। বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।

অর্থ লেনদেন বেড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা হিসেবে পরিচিত এজেন্ট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (এমএফএস) মাধ্যমেও। ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন ছিল। ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে তা ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকায় ওঠে। এ ক্ষেত্রে লেনদেন বেড়েছে ৪ দশমিক ২০শতাংশ। তবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বাড়লেও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কমেছে। 

ডিসেম্বরে এ মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৭৫ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে হয় ৬৬ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে ই-কমার্সে গ্রাহকদের ব্যয়ও বেড়েছে। নভেম্বরে এ মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা। ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেন কিছুটা কমেছে শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ। 

জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, জুলাই-আগস্ট ছিল দেশের নতুন ইতিহাস সৃষ্টির মাস। এ দুই মাসে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক ছিল না। তাই এর বিরূপ প্রভাব ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর পড়েছে। 

আগের যেকোনো মাসের তুলনায় ডিসেম্বর-জানুয়ারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভালো ছিল। এ কারণে ব্যাংকগুলোয় লেনদেন বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি দুই বছর আগের তুলনায় ভালো। রেমিট্যান্সে বড় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের (বিওপি) ঘাটতি কমছে। 

ডলারের বিনিময় হার ও চাহিদাও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের আগের অবস্থা আর পরের অবস্থা পুরোটাই বিপরীত। ফলে এখন মানুষের আস্থা বাড়ছে। এ ছাড়া বহির্বিশ্বেও একটা ইতিবাচক সিগনাল যাচ্ছে, যা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছে।’

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!