অপেক্ষা শুধু প্রিয় মানুষের জন্য নয়। রাস্তার পাশে লম্বা লাইনে বসে আছেন কিছু মানুষ। হঠাৎ দেখে বোঝার উপায় নেই এ লাইন কিসের। এক বেলার খাবারের জন্য লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছেন তারা।
কেউ বসে আছেন, কেউ নিজের বসার জায়গা নিশ্চিত করতে রেখে গিয়েছেন জুতা, ইটের টুকরো। বসে আছেন ছেলে বাচ্চা-বুড়ো, সবাই তাকিয়ে আছেন রাস্তার দিকে কখন আসবে সে গাড়ি। কখন জুটবে একবেলার আহার? অপেক্ষার পালা কাটিয়ে দেখা মিলল খাবারের গাড়ির। আনন্দের উল্লাস সবার চোখে মুখে। আমরা বলছি ভালো কাজের হোটেলের গল্প।

২০১৯ সালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রথম চালু হয় ‘ভালো কাজের হোটেল’। সপ্তাহে এক দিন খাওয়ানো হতো সেখানে। করোনাকালে প্রতিদিন খাওয়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর একে একে রাজধানীর সাত রাস্তা, বনানী, খিলগাঁও ও বাসাবোতে চালু হয় ‘ভালো কাজের হোটেল’। এই হোটেলে এক বেলা খাবার খেতে গেলে আপনাকে দিনে একটিমাত্র ভালো কাজ করলেই চলবে। তবে কেউ যদি সেদিন কোনো ভালো কাজ নাও করে থাকেন, তাকেও খালি মুখে হোটেল থেকে ফিরতে হবে না। কেবল পরদিন একটি ভালো কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেই চলবে।
‘ক্ষুধার্ত মানুষকে এক প্লেট খাবার দিয়ে মানুষের হাসির কারণ হতে পেরেই খুশি’ জানান সাত রাস্তার মোড়ের ভালো কাজের হোটেলের ভলান্টিয়ার মো. শাহ আলম।
তিনি জানান, সাত রাস্তা মোড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জনের খাবার বিতরণ করা হয়। এখানে কাজ করা ভলান্টিয়ার সবাই শিক্ষার্থী। নিজেদের ভালো লাগার জায়গা থেকেই তারা এখানে কাজ করেন।

রাজধানীর ৫ এলাকায় ভালো কাজের হোটেলের কার্যক্রম চলে। এর মধ্যে পান্থকুঞ্জে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত, সাত রাস্তার মোড়ে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত, কমলাপুরে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত, বনানীর কড়াইল বস্তিতে দুপুর আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত এবং বাসাবোতে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া চলে।
আপনার মতামত লিখুন :