রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০২:১৮ পিএম

ক্রীড়াঙ্গনে নারী-পুরুষ সমতার সুপারিশ

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০২:১৮ পিএম

ক্রীড়াঙ্গনে নারী-পুরুষ সমতার সুপারিশ

বাংলাদেশের নারী খেলোয়াড়রা। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন সম্প্রতি তাদের ১৫০ কার্যদিবসের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিস্তারিত সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ক্রীড়াঙ্গনে নারী খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠক এবং ক্রীড়ার সাথে জড়িত অন্যান্য নারীরা যেসব বাধা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন এবং কীভাবে নারী ক্রীড়াবিদরা পুরুষ ক্রীড়াবিদদের মতো সমান সুযোগ লাভ করতে পারেন, সে বিষয়ে বিভিন্ন পেশার নারীদের মূল্যবান মতামত নিয়েছে কমিশন। 

জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় ও বর্তমানে আইসিসি আম্পায়ার চম্পা চাকমা, হ্যান্ডবল ও ভলিবল কোচ এবং রেফারি আখিরুন নেছা, আয়শা জামান খুকী এবং হ্যান্ডবল কোচ ও রেফারি লাজুল কারীম কস্তরী প্রমুখ ক্রীড়াঙ্গনের নারী প্রতিনিধি হিসেবে পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, ক্রীড়া কর্মকাণ্ডে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ সমাজে বিদ্যমান নারী-পুরুষের বৈষম্য কমিয়ে আনতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, কমিশন গভীর উদ্বেগের সাথে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে প্রায় সব খেলাধুলায় পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়দের বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

প্রতিবেদনে এই ধরনের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সরকারের কাছে সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। এই সুপারিশগুলোর মধ্যে কিছু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে এবং কিছু সুপারিশ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য রাখা হয়েছে।

তাদের পর্যবেক্ষণে, কমিশন ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের বিষয়গুলোও তুলে ধরেছে। জাতীয় নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক এবং নারী জাতীয় ক্রিকেট দলকে অদম্য নারী পুরস্কার প্রদানের মতো স্বীকৃতিকে কমিশন বিশেষভাবে অনুপ্রেরণাদায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছে। 

এ ছাড়াও, বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের দুইবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় এবং বিভিন্ন বয়সভিত্তিক পর্যায়ে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো অর্জনগুলো ক্রীড়ায় নারীদের সক্ষমতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। নারীদের অন্যান্য দলীয় ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের সাফল্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বেতন বৈষম্য, সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামোর অভাব এবং বেতন প্রদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কমিশনের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। নারী ফুটবলারদের দ্বিতীয়বার সাফ শিরোপা জয়ের পূর্বে তিন মাস বেতন না পাওয়ার মতো হতাশাজনক তথ্যও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশন জানতে পেরেছে যে, সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাপ্য সম্মান এবং ন্যায্য বেতন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন নারী ক্রীড়াবিদরা। ক্লাব ফুটবলে যেখানে নারী খেলোয়াড়রা ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেন, সেখানে পুরুষ ফুটবলারদের আয় ৫০-৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

নারী ক্রীড়াবিদদের অর্জনকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন না করা এবং প্রাপ্য সম্মান না দেওয়ার বেশকিছু উদাহরণও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়াও, নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, আর্থিক অনিশ্চয়তা, সুযোগ-সুবিধার স্বল্পতা, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধা, পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব, ক্রিকেটের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগের কারণে অন্যান্য খেলায় আর্থিক বরাদ্দ ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।

এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ না দেওয়া এবং ক্রীড়ার সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণের সুযোগের অভাবের মতো বিষয়গুলো প্রতিবেদনে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।

পাশাপাশি, ফেডারেশনগুলোর কার্যনির্বাহী কমিটিতে ৩০ শতাংশ নারী রাখার নিয়ম মানা না হওয়া, নারী ক্রীড়া দলের সাথে পুরুষ ম্যানেজার ও ফিজিও পাঠানো এবং রাজনৈতিক নিয়োগের মতো সমস্যাগুলোও চিহ্নিত করে কমিশন এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিস্তারিত সুপারিশমালা তৈরি করে জমা দিয়েছে।

সরকার বিভিন্ন কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করছে। যে বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হবে, সেই সংস্কারগুলোই বাস্তবায়িত করা হবে। কিছু সংস্কার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে এবং কিছু সংস্কার পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সময়ে কার্যকর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পর কোন বিষয়গুলোতে সংস্কারের জন্য ঐকমত্য হয়। তবে, এরই মধ্যে একটি রাজনৈতিক দল নারী সংস্কারের প্রস্তাবনার সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যানের কথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!