লাল-সবুজের জার্সিতে দীর্ঘদিন ২২ গজে দেখা যায়নি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। সম্প্রতি সাকিবের জন্য বাংলাদেশ দলের দরজা খোলা আছে বলে জানিয়েছে বিসিবি।
পকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) শেষে রিশাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ পাকিস্তানে রয়ে গেলেও, বাংলাদেশ দলের সাবেক তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান সম্ভবত পাকিস্তান ছেড়েছেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে গত বছরই অবসর নিলেও, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে সাকিব বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি। এ কারণে তাকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলেও বিবেচনা করা হয়নি।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ইফতেখার রহমান বলছেন, সাকিবের জন্য জাতীয় দলের দরজা এখনও খোলা।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে খেলার মাঠে সাকিবের অনুপস্থিতি
সাকিব সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে। সেই ম্যাচের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন।
তবে রাজনৈতিক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই শেষ ম্যাচটি আর খেলা হয়নি তার। কারণ, সাকিব ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য।
গত বছর ৫ আগস্ট দলটি ক্ষমতা হারানোর পর থেকে সাকিব আর বাংলাদেশে ফেরেননি।
এ ছাড়া, বল হাতে অ্যাকশনের কারণে বোলিং থেকেও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব, যা থেকে তিনি মুক্তি পান গত মার্চে। প্রায় ছয় মাস পর সদ্য শেষ হওয়া পিএসএল দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।
দীর্ঘ দিন পর সাকিবকে মাঠে দেখার পর থেকেই বাংলাদেশে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিসিবির বক্তব্য: সাকিবের জন্য জাতীয় দলের দরজা খোলা
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান সাকিবের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাকিব সব সময় নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের বিবেচনায় থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, সে যেকোনো দলের জন্য সম্পদ। একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটার। সে তার বোলিং অ্যাকশন শুধরে ফিরেছে ২২ গজে, তাই টিম ম্যানেজমেন্ট তার দিকে নজর রাখবে।
‘নিশ্চয়ই সাকিবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়নি। নিষেধাজ্ঞার পর মাত্র কয়েকটি ম্যাচ খেলেছে সাকিব। আরও কয়েকটি ম্যাচ খেলুক, তারপরই বলা যাবে, সে জাতীয় দলে ফিরবে কি না।’
এদিকে, পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সাকিব অবশ্য প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে পারেননি। বল হাতে ৩ ম্যাচ বোলিং করে তিনি ১টি উইকেট নিয়েছেন এবং ব্যাটিংয়ে ২ ইনিংসে কোনো রান করতে পারেননি।
অপরদিকে বাংলাদেশ দলও সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দলের কাছে সিরিজ হেরে ভুগছে।
দলের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে ইফতেখার রহমান বলেন, দলটি তুলনামূলকভাবে নতুন, চারজন সিনিয়র খেলোয়াড় (সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ) ছাড়াই খেলছে। দলে একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
আমার মনে হয়, এখনকার তরুণদের মধ্যে প্রতিভা আছে, কিন্তু সেটা দেখাতে পারছে না। আমি আগেও বলেছি, তারা যত বেশি খেলবে, ততই উন্নতি করবে। আমরা যেই অবস্থানে আছি, সেখান থেকে শুধু ওপরের দিকেই যাওয়া সম্ভব।’
আপনার মতামত লিখুন :