আজকের দিনটা শুধু একটা ম্যাচের দিন নয়, এটা আইপিএলের ইতিহাসে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। আহমেদাবাদের পিচে আজ এক মেগা ফাইনাল—দুই দল, দুই ক্যাপ্টেন, দুটো স্বপ্ন, আর লাল রঙের আধিক্যের মধ্য দিয়ে ‘দ্য ব্যাটল অফ রেড’।
রাজ্যসভায় আজকের যুদ্ধটা ঠিক যেন কোনো মহাকাব্যের মতো, যেখানে বিরাট কোহলি—ভারতীয় ক্রিকেটের এক মহানায়ক, যিনি ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে একাধিক বিশ্বজয় দেখেছেন। কিন্তু আইপিএল ট্রফির দেখা আজো পাননি, তার চতুর্থ ফাইনালে আজ (০৩ জুন) রাত বাংলাদেশ সময় ৮টায় পা রাখছেন।
২০০৯, ২০১১ আর ২০১৬ তিনবার ফাইনালে ওঠেও জয় ধরা দেইনি তার দলের ঘরে। আজ যেন নিজের ভাগ্যকে বদলের সময়। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে বিদায় নেওয়া বিরাট এখন সবটুকু উজাড় করে দিচ্ছেন নিজের আইপিএল ট্রফির স্বপ্ন পূরণের জন্য।
অন্যদিকে পাঞ্জাব কিংসের নেতৃত্বে দাঁড়িয়ে আছেন শ্রেয়াস আইয়ার। যিনি নিজেও ২০১৫ সালে আইপিএল অভিষেক করেছিলেন। গত বছর কেকেআর ক্যাপ্টেন থেকে এই বছর পাঞ্জাবের হয়ে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় কেনা, যা তাঁর প্রতি দলের আস্থা আর ভালোবাসার প্রমাণ।
গত রোববার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে খেলা সেই ৪১ বলে ৮৭* রানের ইনিংস, যেখানে তাঁর ৫টা চার আর ৮টা ছক্কার ঝড়ে ম্যাচ নিজেদের করে নেন পাঞ্জাবের নয়া কাপ্তান।
রবি শাস্ত্রী বললেন, ‘এই ইনিংস আইপিএলের অন্যতম সেরা।’ আজ যদি জিতে যান, পাঞ্জাব প্রথমবার ট্রফি জিতবে, আর শ্রেয়াস হয়ে উঠবেন প্রথম ক্যাপ্টেন যিনি ধারাবাহিক দুটো বছরে দুটি আলাদা ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে আইপিএল ট্রফি জয় করলেন।
দলের দিক দিয়ে বললে, আরসিবির শক্তি অকল্পনীয়। ওপেনিং জুটি বিরাট কোহলি আর ফিল সল্ট একদিকে ঝড় তুলতে প্রস্তুত। তার পরে রজত পতিদার, জিতেশ শর্মা, লিয়াম লিভিংস্টোনরা রয়েছেন।
বল হাতে জশ হ্যাজেলউড, ভুবনেশ্বর কুমার, যশ দয়াল, ক্রুনাল পান্ডিয়া ও সুয়শ শর্মা যেভাবে বল নাড়াচাড়া করেন, তা দেখলে প্রতিপক্ষের মাথায় টেনশন বসে যায়।
পাঞ্জাবের ওপেনিং জুটিও কম চমৎকার নয়—প্রভসিমরান সিং ও প্রিয়াংশ আর্যের শুরু, তারপর জশ ইঙ্গলিশ, শ্রেয়াস ও নেহাল ওয়াধেরা নিজেদের ব্যাটিং দক্ষতায় দলকে শক্ত অবস্থানে রাখেন।
বল হাতে কাইলি জেমিসন, অর্শদীপ সিং, রহমতুল্লাহ ওমরজাইরা যেভাবে নিজেদের সেরাটা দেন, তা ফাইনাল ম্যাচে বড় অঙ্গনে প্রভাব ফেলবে।
দলের সঙ্গে আছে, আরসিবি-র কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের অভিজ্ঞতা এবং পাঞ্জাবের রিকি পন্টিংয়ের অনুপ্রেরণা। রিকি নিজেই বলেছেন, ‘শ্রেয়স যেকোনো টিমের সম্পদ।’ আজ সেই সম্পদের সামনে ইতিহাস গড়ার সুযোগ।
মাঠে আজ শুধু একটি ট্রফির লড়াই নয়, এটা দুই তরুণ নেতৃত্বের স্মৃতির লড়াই, এটা লাল রঙের মিশনের লড়াই, যেখানে উত্সাহ আর আশা ফুটে উঠবে শেষ পর্যন্ত। যেই দলই জিতুক, নতুন চ্যাম্পিয়ন আজ জন্ম নেবে, নতুন ইতিহাস লেখা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :