নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় কিছু ক্লাব। ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা সম্প্রতি আর্থিক সংগতি নীতি লঙ্ঘনের দায়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা এবং সাবেক ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন চেলসিকে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে।
শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে আরও কঠোর শাস্তির মুখে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এই ক্লাবগুলো।
বার্সেলোনাকে প্রায় ২.১৭ বিলিয়ন টাকা (১৫ মিলিয়ন ইউরো) জরিমানা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, আগামী দুই বছরে যদি তারা আর্থিক সংগতি মানসম্মত পর্যায়ে না আনতে পারে, তাহলে আরও ৪৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা গুনতে হবে।
অন্যদিকে, চেলসিকে বার্সেলোনার চেয়েও বেশি, প্রায় ৪.৪৮ বিলিয়ন টাকা (৩১ মিলিয়ন ইউরো) জরিমানা করা হয়েছে।
তাদের জন্য ৪ বছর সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে উয়েফার শর্ত পূরণ করতে না পারলে ক্লাবটিকে অতিরিক্ত ৬০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা দেওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
উভয় ক্লাবই ২০২৪ সালে উয়েফা নির্ধারিত অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এই শাস্তির মুখে পড়েছে। এর আগে তাদের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ১০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল।
খেলোয়াড় কেনায় সতর্কতা ও আয়ের চাপ
এই বিশাল অঙ্কের জরিমানা এবং ভবিষ্যতে একই পরিস্থিতির শঙ্কায় থাকা দলগুলো নতুন করে খেলোয়াড় কেনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার জন্য আগামী দুই মৌসুমে বার্সা-চেলসির মতো ক্লাবগুলোকে খেলোয়াড় কেনায় অনেক সতর্ক থাকতে হবে। আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এই দুটি ক্লাব।
সেখান থেকে নিশ্চিতভাবে তাদের অন্তত ১০ মিলিয়ন ইউরো লাভ করার লক্ষ্য রয়েছে, যা তাদের আর্থিক বোঝা কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে।
অন্যান্য ক্লাবের ওপরও প্রভাব
উয়েফার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে শুধু বার্সেলোনা ও চেলসিই নয়, আরও কিছু ক্লাবকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাকে গত মৌসুমে খেলোয়াড় অতিরিক্ত অর্থ খরচের দায়ে ১১ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছে।
গত মৌসুমে কনফারেন্স লিগে খেলা অ্যাস্টন ভিলা আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
এ ছাড়াও, আর্থিক শর্ত পূরণ করতে না পারায় ফরাসি ক্লাব লিওঁকে ১২.৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছে উয়েফা। ঋণে জর্জরিত এই ক্লাবটি সম্প্রতি ফরাসি ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা ‘লিগ ওয়ান’ থেকে অবনমিত হয়েছে।
চেলসির উচ্চ ব্যয় এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দলবদলের বাজারে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রেকর্ড সর্বোচ্চ অর্থ খরচ করেছে চেলসি। কিন্তু এই বিপুল বিনিয়োগের ফলে তাদের লাভ-ক্ষতির ভারসাম্য তৈরি হয়নি।
নির্ধারিত অঙ্কের ৮০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ করেও তাদের বিশাল স্কোয়াড এবং খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে গিয়ে রাজস্ব আয় বাড়েনি।
ফলস্বরূপ, তাদের কাঁধে যথাক্রমে ২০ মিলিয়ন ও ১১ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা উঠেছে।
চেলসি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উয়েফার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের বিষয়ে সুন্দর সমাধানের লক্ষ্যে তারা চুক্তিতে যাবে এবং তাদের অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স সঠিক গতিপথেই আছে।
আপনার মতামত লিখুন :