মাঠের বাইরেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ। বিশেষ করে, ব্যাটারদের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে গণমাধ্যম ও সমর্থকদের সমালোচনার মুখে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী টি-টোয়েন্টির আগে কলম্বোয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ দল আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি না।’
বোলিং-ফিল্ডিংয়ের চেয়েও বাংলাদেশের ম্যাচ হারের প্রধান কারণ এখন ব্যাটারদের ব্যর্থতা। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তদের মতো অভিজ্ঞদের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব।
প্রায়ই দেখা যায়, জয়ের মতো পরিস্থিতি থেকেও ব্যাটিং ধসে পড়ে দল। এই প্রেক্ষাপটে সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে।
আজ সংবাদ সম্মেলনে তিনি রুক্ষ মেজাজে বলেন, দেখুন বাংলাদেশ দল আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি না। কেউ যদি এখানে ভালো না করে, তার সমালোচনা হবেই।
এটা স্বাভাবিকভাবে নিতেই হবে। ভালো করলে সবাই বাহবা দেবে। আমি দলের জন্য শতভাগ দিচ্ছি কি না, নিজের জায়গায় সৎ কি না, সেটা আমার কাছে মুখ্য বিষয়।
জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে যদি বয়সভিত্তিক দলের কোচিংও করাতে হয়, তাতেও সালাহ উদ্দিনের কোনো আপত্তি নেই। তার এই মন্তব্য অনেকটাই অভিমানী শোনাচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘দেখুন আমি কোচ। আমাকে যদি কালকে বলে সালাহ উদ্দিন, যাও তুমি ১৩ বছর বয়সি ছেলেদের কোচিং করাও। আমার কোনো আপত্তি নেই।
আমার এখানে ট্যাগ লেখা নেই যে শুধু জাতীয় দলেরই কোচ। এটা নিয়ে আমার কোনো ইগো সমস্যাও নেই। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না—কেউ এলে যদি দলের জন্য ভালো হয়।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্থানীয় কোচদের মধ্যে মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স যে সর্বোচ্চ চারবার শিরোপা জিতেছে, প্রতিবারই প্রধান কোচ ছিলেন সালাহ উদ্দিন।
মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিকদের মতো ক্রিকেটাররা তার অধীনে ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে দারুণ পারফর্ম করেছেন। অথচ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ হওয়ার পর নিজের নামের প্রতি যেন সুবিচার করতে পারছেন না তিনি, এমন অভিযোগও উঠছে।
সালাহ উদ্দিনের মতে, কোচদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আসে, সেগুলো লিখিত আকারে দিলে তাদের জন্য সুবিধা হতো। তিনি বলেন, ‘আজ ২৭-২৮ বছর কোচিং করানোর পরও কেউ যদি বলে—কী যেন বলেছে—আপনারা যেমন বলেন—দলে অনেক অভিযোগ।
কী কী অভিযোগ, সেটা লিখে দিলে ভালো হতো। সবার সামনে প্রকাশ্যে বলে দিলেন। আপনাকে তো প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিলে সে কোচের জন্য ভালো হতো। আর আমি যদি ভুল করে থাকি, সেই জায়গাটা শুধরাব।’
উল্লেখ্য, সালাহ উদ্দিন গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তার মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত, যা পরবর্তীতে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ হারলেও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দাপুটে জয় পেয়েছে। আগামীকাল কলম্বোর প্রেমাদাসায় তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি এখন সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে পরিণত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :