ক্রিকেট ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে দেখা যায়, ০৬ আগস্ট ছিলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। এই দিনে জন্ম নিয়েছেন বিতর্কিত প্রতিভা, গড়েছেন ব্যতিক্রমী রেকর্ড, আবার কেউ পেয়েছেন অপ্রত্যাশিত সম্মান।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আজকের দিনে ক্রিকেট ইতিহাসে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো।
জন্ম নিলেন জেসি রাইডার (১৯৮৪)
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং প্রতিভা জেসি রাইডার আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পরপরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৪৯ গড় ও বাংলাদেশ বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ৯১ রানের ইনিংস দিয়ে দৃষ্টি কাড়েন।
তবে নেশাজনিত সমস্যা ও আচরণগত কারণে বারবার দল থেকে বাদ পড়েন।
২০১৩ সালে এক মারাত্মক হামলায় আহত হন ক্রাইস্টচার্চে। যদিও পরে ফিরেও আসেন। ২০১৫ বিশ্বকাপ দল থেকে আবরও বাদ পড়েন তিনি।
জয়াসুরিয়ার ঐতিহাসিক ট্রিপল সেঞ্চুরি (১৯৯৭)
আজকের এদিনে সানাথ জয়াসুরিয়া ভারতের বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে ৩৪০ রানের ইনিংস খেলেন। যা ছিল সেই সময় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর। তার সঙ্গে রোশন মহানামা যোগ দেন ৫৭৬ রানের পার্টনারশিপে।
শ্রীলঙ্কা সেদিন গড়েন ৬ উইকেটে ৯৫২ রান। যা আজও টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয় (২০১৬)
গলে টেস্টে মাত্র তিন দিনের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়াকে ২২৯ রানে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। এর ফলে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ১৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছে লঙ্কানরা।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল হলেও উপমহাদেশের মাটিতে তাদের স্পিন-দুর্বলতা সেদিন স্পষ্ট হয়ে উঠলো। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে স্পিনের বিপক্ষে ভেঙে পড়লো স্টিভেন স্মিথদের ব্যাটিং লাইনআপ।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ম্যাচের নায়ক ছিলেন অলরাউন্ডার দিলরুয়ান পেরেরা, যিনি দুই ইনিংসে মোট ১০ উইকেট নেন এবং ব্যাট হাতেও একটি অর্ধশতক হাঁকান।
অন্যদিকে, অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক করে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামান।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয় (২০২১)
আজকের এদিনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সকল ফরম্যাটে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০ রানে জয় তুলে নিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।
এই ম্যাচে ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ৫৩ বলে ৫২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১২৭ রান। যদিও এটি বড় সংগ্রহ নয়, তবে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তা রক্ষায় যথেষ্ট প্রমাণিত হয়।
বিশেষ করে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন অনবদ্য। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বিধ্বংসী বোলিংয়ের পর এই ম্যাচেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। চার ওভার বল করে মাত্র ৯ রান দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপকে শ্বাসরুদ্ধ করে দেন। পুরো সিরিজ জুড়েই মুস্তাফিজ ছিলেন দলের সেরা অস্ত্র।
আজকের দিনে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা
১৯৯৮: ইংল্যান্ডের মার্ক বাচার তার ১৩তম টেস্টে করেন প্রথম শতক।
১৯৯৯: ইংল্যান্ডের পিটার সাচ ব্যাট হাতে ৭২ মিনিট টিকে থেকে দর্শকের অভিবাদন কুড়ান, যদিও রান ছিল শূন্য।
২০১১: দক্ষিণ আফ্রিকার নরম্যান গর্ডন ১০০তম জন্মদিন পালন করেন, যা ছিল কোনো টেস্ট খেলোয়াড়ের প্রথম শতবর্ষ উদযাপন।
১৯৭৯: ইংল্যান্ডের ইয়ন বোথাম মাত্র ২ বছর ৯ দিনে নেন ১০০ টেস্ট উইকেট।
আজকের দিনটি ক্রিকেট ইতিহাসে একাধিক স্মরণীয় ঘটনার সাক্ষী। ২২ গজে ব্যাট ও বল হাতে সাফল্য, রেকর্ড এবং অবিশ্বাস্য মুহূর্তগুলো ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আজও অনুপ্রেরণার উৎস।
আপনার মতামত লিখুন :