সাথিরা জাকির জেসি, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে এক অনুপ্রেরণামূলক নাম। খেলোয়াড় হিসেবে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত হলেও আম্পায়ারিংয়ের জগতে তিনি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
দেশের প্রথম নারী হিসেবে ২০২৫ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করার গৌরব অর্জন করবেন সাবেক ক্রিকেটার সাথিরা জাকির জেসি।
ক্রিকেটার থেকে আম্পায়ার
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বেড়ে ওঠা জেসির শৈশব কেটেছে ব্যাট-বলের সঙ্গে। স্কুলশিক্ষক মা হাসিনা আক্তার এবং ব্যাংকার বাবা রফিকুল ইসলাম আরবড় ভাই দারুল রৌশনসহ পরিবারের সবার অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল তার সাফল্যের মূল ভিত্তি।
বিকেএসপিতে ভর্তি হয়ে ক্রিকেটকে আরও কাছে থেকে জানার সুযোগ পান তিনি। এরপর পড়াশোনার পাশাপাশি চলতে থাকে তার ক্রিকেট অনুশীলন।
জেসি ছিলেন একজন ধৈর্যশীল ব্যাটার এবং নিখুঁত ফিল্ডার। ২০১১ সালে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারে তিনি দুটি ওয়ানডে এবং একটি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
খেলোয়াড় জীবনের অবসরের পর জেসি বুঝতে পারেন, মাঠের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ হয়নি। খেলাটির নিয়ম-কানুন এবং কৌশল সম্পর্কে তার গভীর আগ্রহ তাকে আম্পায়ারিংয়ের দিকে নিয়ে যায়। কঠোর প্রশিক্ষণ আর নিরলস পরিশ্রমে তিনি নিজেকে একজন পেশাদার আম্পায়ার হিসেবে গড়ে তোলেন।
বাংলাদেশের প্রথম নারী আন্তর্জাতিক আম্পায়ার
২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ দিয়ে আম্পায়ার হিসেবে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়। এই অর্জন তাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম নারী আন্তর্জাতিক আম্পায়ারের গৌরব এনে দেয়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জেসি তার নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন বারবার। নারী বয়স ভিত্তিক বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ এবং আইসিসি ইভেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে তিনি সফলভাবে আম্পায়ারিং করেছেন।
২০২৫ সালের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং করার সুযোগ পেয়ে জেসি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন।
দেশের প্রথম নারী হিসেবে এই গৌরব অর্জন করে তিনি শুধু নিজের নয়, বরং বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটকেও এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন