বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনার তুঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। আর এই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার তামিম ইকবাল খান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন থেকে সরে গেলেন সাবেক এই ড্যাশিং ওপেনার। এখন তার সরে দাঁড়ানো নিয়েই ক্রিকেটাঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনার নতুন মাত্রা। অনেকে প্রশ্নও তুলছেন, কার ‘চাপে’ নির্বাচন থেকে হঠাৎ সরে দাঁড়ালেন তিনি?
অবশ্য, তামিম ইকবাল নিজেই সরে দাড়ানোর পর এই নির্বাচনকে ‘কালো দাগ’ এবং ‘নোংরামি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, এটি ‘স্বাভাবিক নির্বাচন’ ছিল না।
যদিও বিভিন্ন সূত্র বলে আসছিল, তামিম ইকবাল প্রথমে পরিচালক হয়ে পরে সভাপতি পদে লড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তার সঙ্গে সভাপতি পদের লড়াইয়ে থাকার কথা ছিল বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ। কাউন্সিলর ও পরিচালক প্রার্থীদের মধ্যে তামিমের ব্যাপক সমর্থন ছিল বলেও জানা গিয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কাউন্সিলর জানিয়েছেন, তামিম ইকবাল পরিচালক হয়ে সভাপতি পদে লড়লে সহজেই আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে পরাজিত করে বিসিবির নতুন সভাপতি হতে পারতেন।
বিসিবি সভাপতি পদে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে তার নাম আলোচনায় এলেও এখন শেষ মুহূর্তে তার সরে দাঁড়ানো জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, তামিমের শক্তিশালী উপস্থিতির কারণে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতির চেয়ার অনিশ্চিত হয়ে পড়ায়, একটি মহল থেকে তামিমকে ‘চাপ প্রয়োগ করে’ নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রগুলো এও বলছে, আমিনুলকে জেতাতে সরকারের একটি মহল ‘সক্রিয়’। এই মহল প্রথমে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তামিম যে ক্লাবের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন (ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব) সেই ক্লাবসহ ১৫টি ক্লাবের বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মূলত ওই নিষেধাজ্ঞায় তামিমের নির্বাচনের পথকে কঠিন করে তোলে।
তামিম-আমিনুলের মুখোমুখি হওয়া শুরু হয়েছিল গত ২১ সেপ্টেম্বর, যখন এক প্রেস কনফারেন্সে তামিম বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিরুদ্ধে একটি চিঠি ইস্যুকে কেন্দ্র করে ‘গঠনতন্ত্রবিরোধী’ অভিযোগ তোলেন।
গতকাল হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই তামিমের মনোনয়ন প্রত্যাহারের গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, যা আজ সত্যি হলো।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তামিম ইকবাল বলেন, ‘এ নির্বাচন কালো দাগ হয়ে গেল। এটাকে আসলে কোনো দিক থেকেই ইলেকশন বলা যাবে না।
তিনি আরও যোগ করেন, এ নোংরামির সঙ্গে আমরা কোনোভাবেই পার্ট রাখতে পারি না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফ্যানরা এটা ডিজার্ভ করে না... এটা স্পষ্ট, কারা কী ধরনের বল প্রয়োগ করেছে, কীভাবে করেছে। অনেকে অনেকভাবে জিততে পারেন, কিন্তু আমি বলব ক্রিকেট হেরে গেছে।’
নির্বাচনের ‘ফিক্সিং’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা বলেন, ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করতে হবে। কিন্তু সবার আগে প্রয়োজন, নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করা।’
আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিসিবি নির্বাচনের পরিচালক পদের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের শেষ সময় ছিল। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন