নভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে আগামীকাল নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে। নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ভারত।
ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে ‘টিম ইন্ডিয়া’ নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের অভিষেক ঘটাতে মরিয়া, যদিও লরা ওয়লভার্ডটের নেতৃত্বাধীন প্রোটিয়া বাহিনী তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক পরাজয়ের ধারা ভেঙে দক্ষিণ আফ্রিকা মাঠে নামলেও, ম্যাচের ফল নির্ধারণের মূল চাবিকাঠি হতে চলেছে ভারতের বোলিং আক্রমণ এবং ব্যাটিং গভীরতা।
চলুন দেখে নেওয়া যাক ফাইনাল ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে....
১. নতুন বলের মহারথীরা বনাম প্রোটিয়া ওপেনাররা
লিগ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলেও, নতুন বলে ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে। আগের ম্যাচে মাত্র ৬ ওভারের মধ্যে প্রোটিয়াদের ১৮/২-এ আটকে দেওয়ায় স্পিনারদের কাজ সহজ হয়েছিল।
২. মারিজান কাপ বনাম স্মৃতি মান্ধানা
ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট-শিকারি মারিজান কাপ মুখোমুখি হবেন ভারতের ব্যাটিং সুপারস্টার স্মৃতি মান্ধানার। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৫/২০ রেকর্ড করা কাপের বিরুদ্ধে মান্ধানা আগের খেলায় ২৪ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন।
এই ব্যক্তিগত দ্বৈরথটিতে কৌশলগত উত্তেজনা তুঙ্গে থাকবে, কারণ মান্ধানার ব্যাট ভারতকে বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করতে পারে।
৩. জেমিমা রদ্রিগেজ বনাম প্রোটিয়া মিডল ওভারের বোলাররা
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ১২৭* রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাড়া জাগিয়েছিলেন জেমিমা রদ্রিগেজ। লিগ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া জেমিমা এবার আরও সতর্ক থাকবেন।
মিডল ওভারে ক্লো তাইরন ও ননকুলুলেকো লাবার স্পিন ও পেস তাঁকে বড় চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।
৪. দীপ্তি শর্মা বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ডানহাতি ব্যাটাররা
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী দীপ্তি শর্মা ফাইনালে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা দেবেন। লিগ ম্যাচে অ্যানেকে বোশকে আউট করলেও, প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা তাকে সহজে পরাস্ত করেছিল।
মিডল ওভারে চাপ সৃষ্টি করে উইকেট তুলে নেওয়া এবং রানের গতি কমানোর ক্ষেত্রে দীপ্তির পারফরম্যান্স ভারতের জয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
৫. নাদিন ডি ক্লার্ক বনাম ভারতের ডেথ বোলাররা
দক্ষিণ আফ্রিকার নাদিন ডি ক্লার্ক লিগ ম্যাচে ৫৪ বলে ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন। তার বড় হিট করার ক্ষমতা ভারতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ।
ভারতের ডেথ বোলিং-এর কৌশল কী হবে—তার বিরুদ্ধে ঝুঁকি নিয়ে আক্রমণাত্মক হওয়া, নাকি ডেথ ওভারের নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে তাকে আটকে রাখা—তার ওপরই নির্ভর করছে ম্যাচের শেষাংশ।
এদিকে, আগামীকাল রোববার নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণ করার অপেক্ষায় পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। টানটান উত্তেজনায় ভরা এই ফাইনাল নিশ্চিতভাবেই নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ম্যাচ হতে চলেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন