মিরপুরের শেরে-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শোকের দিনে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেল বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই প্রথমবারের মতো সিরিজ নিজেদের করে নিলো টাইগাররা।
আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সিরিজের দ্বিতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ছোট টার্গেটে ব্যাট করতে নেম শুরুতেই পথ হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
প্রথম ইনিংস শেষে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিলো ১২০ বলে মাত্র ১৩৪ রান। এই রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান।
দলীয় ৪ রানে প্রথম উইকেট থেকে ১৫ রানে নেই ৫ উইকেট। পাওয়ার প্লে শেষে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ১৭ রানে ৫ উইকেট।
টানা উইকেট হারিয়ে যখন চরম ব্যাটিং বিপর্যে পড়ে সালমান আগার দল। তখনই দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ ও ফাহিম আশরাফ। তবে তা আর হলো না! দলীয় ৪৭ রানের মাথায় আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন খুশদিল।
খুশদিল ফিরলেও পাকিস্তানের শেষ ভরসা ছিল অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ! কারণ বাংলাদেশের মাটিতে বিপিএলে শেষ মুহূর্তে অনেক ম্যাচে ফাহিমের ব্যাটিং তাণ্ডব দেখেছে দর্শকরা।
এদিনও বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন ফাহিম। সবাই যখন সাজঘরের যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত ঠিক তখনি একপাশ আগলে রেখে দলকে প্রায় জয়ের দারপ্রান্তে নিয়ে গেলেন ফাহিম।
১৮.৫ বলে রিশাদকে ছক্কা মেরে যখন জয়ের জানান দিচ্ছিলেন ঠিক তখনি ফাহিমকে বোল্দ আউট করে হারার শঙ্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ। আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রান সংগ্রহ করেন ফাহিম আশরাফ।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান , প্রথম বলে চার মেরে খেলা কিছুটা জমিয়ে তোলার চেষ্টা করনে পাকিস্তান। কিন্তু তা আর হলো না ১৯.২ বলে পাকিন্তানের ১০ম উইকেট তুলে ৮ রানের জয় তুলে নেয় লিটন দাসের দল।
এই জয়ের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে তিন উইকেট নেন শরীফুল ইসলাম, এবং ২টি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব ও শেখ মেহেদী।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুর দিকে ব্যাটিং বিপর্যের মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। দলীয় ৫ রানের মাথায় ফাহিম আশরাফের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নাঈম শেখ।
আউট হওয়ার আগে ৭ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৩ রান সংগ্রহ করেন নাঈম। নাইম ফেরার পর লিটনকে সাথে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন পারভেজ হোসেন ইমন।
কিন্তু তা আর পারলেন না লিটন ও ইমন। দলীয় ২৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগররা। তার ৬ বল পর আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
দলীয় ২৮ রানের মাথায় ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ইমন। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ রান সংগ্রহ করেন ইমন।
পরপর উইকেট যখন বাংলাদেশ ধুকছে তখনি ব্যাট হাতে দলের হাল ধরেন মেহেদী ও জাকের আলী। দুজনের ৫৩ রানের জুটিতে শুরুর বিপর্য় কাটায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮১ রানের মাথায় শেখ মেহেদী আউট হলেও একপাশ আগলে রেখে দলকে মাঝারি সংগ্রহ এনে দেন জাকের আলী।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা।
এদিন ব্যাট হাতে বাংলাদেশর হয়ে জাকের আলী করেন ৪৮ বলে ৫৫ রান, শেখ মেহেদী ২৫ বলে ৩৩ রান, পারভেজ হোসেন ইমন ১৪ বলে ১৩ রান, রিশাদ হোসেন ৪ বলে ৮ রান সংগ্রহ করেন।
ম্যাচের ফল: বাংলাদেশ ৮ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: জাকের আলী
আপনার মতামত লিখুন :