মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম

জানা, এনরিকে ও পিএসজি ‘এক হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া জয়ের গল্প’

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম

এনরিকের পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে জানা জার্মানির মাটিতে পুঁতেছিল বার্সেলোনার পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

এনরিকের পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে জানা জার্মানির মাটিতে পুঁতেছিল বার্সেলোনার পতাকা। ছবি: সংগৃহীত

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এক দশক আগের সেই ছবিটা আবার ভেসে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। লুইস এনরিকে স্যুট পরে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে, মিটিমিটি হাসছেন। 

তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে জানা বার্সেলোনার লাল-নীল-হলুদ পতাকা হাতে একটু দূরে। বাবার চোখে খুশির ঝিলিক। পরের ঘটনা আরও মধুর, জানা বাবার সামনেই জার্মানির মাটিতে পুঁতেছিল বার্সেলোনার পতাকা।

চার বছর পর, ২০১৯ সালে ৯ বছর বয়সী জানা ক্যান্সারের সঙ্গে পাঁচ মাসের লড়াই শেষে মারা যায়। সে সময় এনরিকে ছিলেন স্পেন দলের কোচ। মেয়ের অসুস্থতার খবর শুনেই কোচের দায়িত্ব ছেড়ে ছুটে গিয়েছিলেন তার কাছে। 

শোক কাটিয়ে পাঁচ মাস পর ফিরেছিলেন। এই কঠিন সময়ে তিনি শুধু স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপ থেকেও দূরে ছিলেন, কারণ মেয়ের হারানোর কষ্ট তিনি কারো সঙ্গে ভাগ করতে চাননি।

সেই এনরিকেই এখন মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় সম্পূর্ণ অন্য রূপে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে পিএসজি ইতিহাস গড়ার পর আনন্দে আত্মহারা। 

খেলা শেষ হওয়ার আগেই তার দুই হাত তুলে উদযাপন, খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাঁধভাঙা উল্লাস, সবকিছুই যেন এক ভিন্ন এনরিকেকে তুলে ধরেছে।

এটি কেবল মাঠের ফল নয়, কারণ খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে এমন সাফল্য তার জীবনে নতুন কিছু নয়। নতুন যা, তা হলো মেয়ের মুখে হাসি ফোটানোর এক অদেখা আকাঙ্ক্ষা।

গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাকে এনরিকে বলেছিলেন, ‘বার্লিনে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর আমার সঙ্গে তার একটি অবিশ্বাস্য ছবি মনে আছে। মাঠে বার্সেলোনার পতাকা পোঁতার ছবি। 

আশা করি, পিএসজির সঙ্গেও এটা করতে পারব। প্রশ্ন জাগতে পারে, জানা তো নেই, তাহলে বাবা-মেয়ে কীভাবে একসঙ্গে পিএসজির পতাকা পুঁতবে? এনরিকের পরের কথাগুলো সেই কষ্টের গভীরতা প্রকাশ করে। ‘আমার মেয়ে সেখানে (ফাইনাল) থাকবে না, শারীরিকভাবে থাকবে না। কিন্তু আধ্যাত্মিকভাবে থাকবে, আর এটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’ 

একজন বাবার জন্য এই গুরুত্বের অর্থ একটা, মেয়েকে খুশি রাখতে হবে, তার সামনে হারলে চলবে না, জিততে হবে।

ইন্টারকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পর এনরিকে পরেছিলেন জানা ফাউন্ডেশনের কালো টি-শার্ট। বুকের ওপর ১০ বছর আগের সেই ছবিটির মতো বাবা-মেয়ের পিএসজির পতাকা পোঁতার স্কেচ। তার জানুয়ারির কথাগুলো শুধুই কথার কথা ছিল না। পিএসজির ইউরোপ-সেরা মুকুট তাই এক মেয়েহারা বাবার বিশুদ্ধ আবেগ তাড়িত এক বিজয়।

এই আবেগ পিএসজির সমর্থকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছিল। খেলোয়াড়েরা ট্রফি বুঝে নেওয়ার পর গ্যালারিতে ভেসে ওঠে এনরিকে ও তার প্রয়াত মেয়েকে নিয়ে বানানো বড় এক তিফো। 

তাতে দেখা যায়, মাঠে এনরিকে পিএসজির পতাকা পুঁতছেন, ৮ বছর বয়সী জানা পাশেই দাঁড়িয়ে, পরনে পিএসজির ৮ নম্বর জার্সি। মিক্সড জোনে এই তিফো দেখে এনরিকে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। 

সমর্থকেরা আমার পরিবারের জন্য যে ব্যানার করেছেন, সেটা খুবই আবেগপূর্ণ ব্যাপার। তবে আমি সব সময় মেয়ের কথাই ভাবি।’

স্প্যানিশ এ কোচের সহজ যুক্তি, ‘মেয়েকে মনে রাখতে আমার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের দরকার নেই। সে সব সময় আমাদের সঙ্গেই আছে, বিশেষ করে যখন আমরা হেরে যাই।’ হারে কেউ পাশে থাকলে কষ্ট লাঘব হয়, আর জয়ে পাশে থাকলে আনন্দ হয়। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!