ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম, যে মাঠটি একসময় দেশের ফুটবলের প্রাণভোমরা ছিল সেটিই আজ (বুধবার) আবার ফিরিয়ে দিচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের উত্তাপ।
দীর্ঘ ১৬৫৯ দিন পর এই ঐতিহাসিক মাঠে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে এই প্রত্যাবর্তনের গল্প।
২০২১ সালের জুলাইয়ে স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই এখানে বন্ধ ছিল প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল। যদিও ঘরোয়া ফুটবল কিছুদিন চলেছিল আগস্ট পর্যন্ত, তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বরের পর।
তখন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নেপালের বিপক্ষে একটি সিরিজের আয়োজন করেছিল বাফুফে।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার জন্যও এটি বিশেষ দিন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বে থাকলেও প্রথমবারের মতো তিনি মাঠে নামছেন দেশের হোম ভেন্যুতে।
একইসঙ্গে শেখ মোরসালিন, মিতুল মারমাসহ আরও কয়েকজন ফুটবলার এই প্রথম খেলবেন জাতীয় স্টেডিয়ামে।
গত তিন বছরে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাই হয়ে উঠেছিল দেশের অলিখিত হোম ভেন্যু। কিন্তু জাতীয় স্টেডিয়ামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ফুটবলের গৌরবময় অতীত।
কোচ হ্যাভিয়েরও এ বিষয়ে বলেন, ‘মাঠ নতুন হলেও এই স্টেডিয়ামের সঙ্গে বাংলাদেশের সবাই পরিচিত।’
বারবার সময় ও বাজেট বাড়িয়ে ১৫৮ কোটি টাকায় শেষ হয়েছে স্টেডিয়ামটির সংস্কারকাজ। নতুন হয়েছে ফ্লাডলাইট, অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক, গ্যালারি, প্রেসবক্সসহ সবকিছুই।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গ্যালারির শেডে বসানো হয়েছে আলো। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ফিরতি ম্যাচ, দর্শক-ফুটবলার-সংবাদকর্মী সবার মাঝেই উত্তেজনার কমতি নেই।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনে থাকা স্টেডিয়ামটি বর্তমানে ফুটবল ও অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন ২০২৪ সাল থেকে জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজন শুরু করলেও বাফুফে এখনো কোনো বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি এখানে।
যদিও নারী ফুটবল দলের অনুশীলনের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে মাঠটি।
অথচ এই মাঠেই একসময় লেখা হয়েছে দেশের ক্রীড়ার বহু স্মরণীয় অধ্যায়। আবাহনী-মোহামেডান, ব্রাদার্স ইউনিয়নের ঐতিহাসিক ম্যাচ থেকে শুরু করে ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়।
২০১০ এসএ গেমসের ফুটবলে সোনা জয়, এমনকি আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ, জিনেদিন জিদান ও মোহাম্মদ আলীর আগমন সবই এই স্টেডিয়ামের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে।
এখন ফুটবলের নতুন অধ্যায় রচনা করতে নামছে জামাল ভূঁইয়া ও তার দল।
আপনার মতামত লিখুন :