নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি, ভোগান্তিতে মানুষ 

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দেশেই টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অফিসগামী কর্মজীবী, শিক্ষার্থী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের সড়কে জমে থাকা পানি এবং যানবাহনের সংকটে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি।       

ঢাকার মালিবাগ, খিলগাঁও, বাড্ডা, রামপুরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাসের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেক এলাকায় রিকশা, ভ্যান ও সিএনজির ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত। সড়কে পানি জমে থাকায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। অনেকেই নিরুপায় হয়ে হাঁটু পানির মধ্য দিয়ে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছেছেন।  

মেট্রোরেল ও অন্যান্য সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কাদামাখা ও ভাঙা সড়কে আটকে পড়ছে রিকশা ও যানবাহন। জনভোগান্তি আরও বেড়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।

চাঁদপুরে মুষলধারে বৃষ্টি, ছোট নৌযান চলাচল বন্ধ 

বিস্তারিত পড়ুন

এদিকে চট্টগ্রাম নগরেও একই চিত্র। চকবাজার, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, পাঠানটুলী ও কাপাসঘোলা এলাকায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। রাস্তার গর্ত পানির নিচে ঢেকে যাওয়ায় ছোটখাটো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাজার কোটি টাকা ব্যয়, দফায় দফায় কর্মকর্তার রদবদল; তবুও জলাবদ্ধতার সমাধান নেই। 

চলমান ঝড়-বৃষ্টি থাকায় বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুরের খেটে খাওয়া মানুষজন। এতে করে সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কমে গেছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে ও বাজার এলাকায় দেখা গেছে মানুষের তুলনামূলকভাবে উপস্থিতি কম।  

বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশাল নদীবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। যার ফলে যাত্রীদের সাময়িক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।    

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপের কারণে দেশের ছয়টি উপকূলীয় নদীবন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলজুড়ে এই সতর্কতা বলবৎ রয়েছে। 

বৈরী আবহাওয়ায় বরিশাল থেকে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ

বিস্তারিত পড়ুন

এরই মধ্যে ভোলা থেকে সব রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি। 

হাতিয়া উপজেলায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সুখচর, নলচিরা, চর ঈশ্বর, কেরিং চর, ঢালচর, চর ঘাসিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

সারা দেশেই সকাল থেকে একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।