বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের ছয়টি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনভর টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা আগামী পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় দেশের অন্তত ১২টি জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবন, জলাবদ্ধতা ও ভূমিধসের সম্ভাবনায় জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা।
ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, খুলনা ও বরিশাল ছাড়া দেশের বাকি ছয়টি বিভাগ- রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে সর্বোচ্চ ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে ঢাকায় ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
১২ জেলায় বন্যার পূর্বাভাস
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, অতি ভারী বর্ষণের কারণে দেশের নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ১২ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
রংপুর বিভাগে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এর ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে সুরমা, কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী ও ভোগাই-কংস নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। এতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলার নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগে মুহুরী, সিলোনিয়া, ফেনী ও হালদা নদীর পানি সতর্কসীমায় থাকতে পারে। এতে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাহাড়ি ভূমিধস ও জলাবদ্ধতার আশঙ্কা
আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধস ঘটতে পারে। পাশাপাশি, ভারী বর্ষণের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে।
তাপমাত্রা কমছে
বৃষ্টিপাতের কারণে সারা দেশের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে। সোমবার সকাল পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের প্রায় সব বিভাগেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আশ্বস্তি ও সতর্কতা
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ‘অভ্যন্তরীণ ভারী বর্ষণ ও উজানের পানির প্রবাহে নদ-নদীর পানি বাড়লেও তা কিছুদিন পর কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন