শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:২২ পিএম

বাংলাদেশে হঠাৎ কেন কারাতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:২২ পিএম

কারাতে প্রশিক্ষণ। ছবি - সংগৃহীত

কারাতে প্রশিক্ষণ। ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশে সরকার একটি নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের জন্য মৌলিক আত্মরক্ষা এবং অস্ত্র সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে দেশের নাগরিকদের এমনভাবে প্রস্তুত করা যাতে তারা প্রয়োজনে দেশের রিজার্ভ ফোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, এই প্রশিক্ষণ প্রাথমিকভাবে প্রায় নয় হাজার তরুণ ও তরুণীকে দেওয়া হবে, এবং এটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি নভেম্বর মাস থেকে শুরু হবে এবং বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন চলছে।

প্রশিক্ষণকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে আনা হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের ভৌগলিক ও সামরিক অবস্থানকে মাথায় রেখে সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তিনি আরও বলেন, মৌলিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাগরিকদের হাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকলে তারা দেশের সেবা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এই প্রশিক্ষণকে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি সহায়ক হাতিয়ার হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাতে কোনো হঠাৎ পরিস্থিতি বা সংকটের সময় দেশের জনগণ সুসংগঠিতভাবে কাজ করতে পারে।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বিকেএসপি কেন্দ্রগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আট হাজার ২৫০ জন তরুণ এবং ৬০০ জন তরুণীকে ১৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণটি ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের জন্য খোলা এবং এতে জুডো, কারাতে, তায়কোন্দো এবং শ্যুটিংয়ের মৌলিক বিষয় শেখানো হবে।

এই প্রশিক্ষণ সাতটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা প্রায় চার হাজার ২০০ টাকা ভাতা, থাকা-খাওয়া এবং প্রশিক্ষণকালীন পোশাক পাবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সরাসরি লাইভ ফায়ারিং বা গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ বর্তমানে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তত্ত্বীয় ও প্রাকটিক্যাল অংশে অস্ত্র পরিচালনা, নিরাপদ হ্যান্ডলিং এবং আত্মরক্ষা কৌশল শেখানো হবে।

ভবিষ্যতে এই প্রশিক্ষণকে আরও বিস্তৃত করে লাইভ রাউন্ড ফায়ারিং পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হলো দশ বছরের মধ্যে প্রায় দুই লক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণী তৈরি করা, যারা দেশের রিজার্ভ ফোর্সের অংশ হতে পারবে এবং প্রয়োজনে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাধারণ নাগরিকদের হাতে অস্ত্র সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান থাকা কিছু ক্ষেত্রে অবৈধ কার্যক্রম বা নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি করতে পারে। শিক্ষার্থীরা এবং নাগরিক সমাজের কিছু অংশও এ বিষয়ে সতর্ক।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের বাছাই প্রক্রিয়া কঠোর রাখা হবে। বাছাইয়ের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা, চারিত্রিক সনদপত্র এবং মামলা না থাকার শর্ত থাকতে হবে। সিলেকশন কমিটিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বিকেএসপি কর্মকর্তা এবং আর্মি অফিসারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে, এবং গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় স্ক্রুটিনি সম্পন্ন করা হবে যাতে কোনো উগ্র বা অবৈধ ব্যক্তি প্রশিক্ষণে প্রবেশ করতে না পারে।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় অংশগ্রহণকারীরা বিকেএসপির সাতটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে আবাসিকভাবে প্রশিক্ষণ নেবেন। ১৫ দিনের এই প্রশিক্ষণকালীন আবাসিক ব্যবস্থা অংশগ্রহণকারীদের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট, থাকা-খাওয়া এবং প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। প্রশিক্ষণটি চারটি মূল বিভাগে বিভক্ত: জুডো, কারাতে, তায়কোন্দো এবং শ্যুটিং। প্রতিটি বিভাগের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা কৌশলগত চিন্তাভাবনা, শারীরিক সক্ষমতা এবং আত্মরক্ষা দক্ষতা অর্জন করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে কিছু রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার উপাদানও থাকতে পারে। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টা দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি কোনো নতুন বাহিনী গঠনের প্রচেষ্টা নয়, বরং দেশের সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক প্রতিরক্ষা ও আত্মরক্ষা শিক্ষিত করার একটি কার্যক্রম।

Link copied!