মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ১০:১৫ এএম

গবেষণা

‘ফ্যাশন ট্রেন্ডে’ গা ভাসাচ্ছে শিম্পাঞ্জিও

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ১০:১৫ এএম

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি ভ্যাল ‘কানের ভেতরে ঘাস’ পরে ‘ফ্যাশন ট্রেন্ডে’ মেতেছে। ছবি- সংগৃহীত

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শিম্পাঞ্জি ভ্যাল ‘কানের ভেতরে ঘাস’ পরে ‘ফ্যাশন ট্রেন্ডে’ মেতেছে। ছবি- সংগৃহীত

আফ্রিকার একটি অভয়ারণ্যে শিম্পাঞ্জি বৈজ্ঞানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। সেখানকার শিম্পাঞ্জিরা নিজেদের মধ্যে কানের ছিদ্র কিংবা পেছনের দিক থেকে ঘাস বা লাঠির টুকরো ঝুলিয়ে রাখার এক ধরনের ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড’ তৈরি করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ আচরণ ব্যথা বা শারীরিক অস্বস্তি কমানোর জন্য নয়, বরং নিছক সামাজিক প্রভাব ও অনুকরণের ফল।

২০১০ সালে জাম্বিয়ার চিমফুনশি ওয়াইল্ডলাইফ অরফানেজ ট্রাস্টে গবেষকরা প্রথম লক্ষ্য করেন, একটি স্ত্রী শিম্পাঞ্জি কানে ঘাস ঝোলানো শুরু করলে শিগগিরই তার দলের অন্যান্য সদস্যরা একই কাজ করতে থাকে। গবেষণার প্রধান লেখক ও নেদারল্যান্ডসের উট্রেখ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণগত জীববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এড ভ্যান লিউয়েন সিএনএন-কে বলেন, ‘এটা নিছক সামাজিক ঐতিহ্য, যেমন মানুষের ফ্যাশন ট্রেন্ড’।

গবেষকরা দেখেছেন, এই আচরণ শিম্পাঞ্জিদের এক দলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার পর আরও এক দশক পরে অন্য একটি দলও একই রকম অভ্যাস গড়ে তোলে। তবে মজার ব্যাপার হলো, দ্বিতীয় দল শুধু কানে নয়, কেউ কেউ মলদ্বারেও লাঠি বা ঘাস ঢোকানো শুরু করে।

ভ্যান লিউয়েনের ধারণা, শিম্পাঞ্জিদের এই অভ্যাস মানব পরিচর্যাকারীদের প্রভাবেই গড়ে উঠেছে। কারণ দেখা গেছে, অভয়ারণ্যের এক অংশের কর্মীরা দেশলাই বা ডাল দিয়ে কানে খোঁচানোর অভ্যাসে অভ্যস্ত ছিলেন, আর অন্য অংশের কর্মীরা তা করতেন না। প্রথম দলের শিম্পাঞ্জিরা হয়তো সেই আচরণ অনুকরণ করেছিল, যা পরে ধীরে ধীরে দ্বিতীয় দলের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।

নারী শিম্পাঞ্জি আইমি কানে লাঠি পরে আছে। ছবি- সংগৃহীত

ভ্যান লিউয়েন এ ঘটনাকে এক ধরনের ‘ভাইরাল সামাজিক শিক্ষা’ বলে ব্যাখ্যা করেন। তার মতে, শিম্পাঞ্জিরা মানুষের কাছ থেকে আচরণ অনুকরণ করতে পারে এবং তা তাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। উদাহরণ হিসেবে তিনি নেদারল্যান্ডসের একটি চিড়িয়াখানার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে একটি স্ত্রী শিম্পাঞ্জি এমনভাবে হাঁটতে শুরু করে যেন সে বাচ্চা বহন করছে, যদিও বাস্তবে তার কোনো বাচ্চা ছিল না।

অবাক করার বিষয় হলো, অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো দল একই রকম হাঁটা শুরু করে। নতুন করে দলে যোগ দেওয়া দুই স্ত্রী শিম্পাঞ্জির মধ্যে যারা দ্রুত এই হাঁটা অনুকরণ করেছিল, তাদের দ্রুত দলে মিশে নিতে সমস্যা হয়নি; আর যারা অনুকরণ করেনি, তাদের গ্রহণযোগ্যতা পেতে সময় লেগেছে বেশি।

এমন উদাহরণ থেকে ভ্যান লিউয়েন বলেন, এই ধরনের সামাজিক আচরণ মানুষের মতোই সম্পর্ক মসৃণ ও মানিয়ে নেওয়ার কাজে সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে অভয়ারণ্যের মতো জায়গায়, যেখানে শিম্পাঞ্জিদের শিকারি বা প্রতিদ্বন্দ্বী দল নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হয় না, তারা অনেক বেশি অবসর সময় পায়। আর সেই অবসরেই তারা একে অপরের সঙ্গে সামাজিক আচরণ ভাগাভাগি করে এবং নতুন নতুন ধারা তৈরি করে।

নারী শিম্পাঞ্জি আইমি কানে লাঠি পরে আছে। ছবি- সংগৃহীত

তবে ভ্যান লিউয়েন মনে করেন, বন্য শিম্পাঞ্জিরাও হয়তো এ ধরনের সাংস্কৃতিক আচরণ তৈরি করতে সক্ষম, শুধু এখনো সেগুলো সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা হয়নি। তার পরবর্তী গবেষণায় লক্ষ্য করা হয়েছে, শিম্পাঞ্জিরা কি বারবার নতুন খাদ্য সংগ্রহের কৌশল উদ্ভাবন করতে পারে এবং মানুষের মতো দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটাতে সক্ষম কি না।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমেট মডেলস ফর বিহেভিওরাল ইভোলিউশন ল্যাবের গবেষক এলোডি ফ্রেইম্যান মনে করেন, এ ধরনের পর্যবেক্ষণ আমাদের বোঝার পরিধি বাড়ায়। তিনি বলেন, ‘শিম্পাঞ্জিরা যদি মানুষের অনুকরণ করতে পারে, তবে কি তারা অন্যান্য অ-মানব প্রজাতিকেও অনুকরণ করতে পারে? এটি প্রাইমাটোলজির জন্য একটি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ প্রশ্ন।’

Link copied!