ভারত সরকারের নির্দেশনায় আট হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট ব্লক করছে এক্স (সাবেক টুইটার)। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় এই ঘোষণা দিল ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি।
শুক্রবার (৯ মে) এক বিবৃতিতে তারা সরকারের আদেশ পালন করবে বলে জানিয়েছে। তবে এই নির্দেশকে নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি বলেও উল্লেখ করেছে।
বিবৃতিতে এক্স বলেছে, ‘ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ অর্ডার পেয়েছে এক্স। যাতে বলা হয়েছে ভারতের ভেতরে আট হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে হবে। এই নির্দেশ না মানলে ভারতের স্থানীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এই আদেশে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ও প্রখ্যাত এক্স ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টও ব্লকের তালিকায় রয়েছে।’
তবে সংস্থাটির দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো নির্দিষ্ট পোস্ট বা কনটেন্টের উল্লেখ করা হয়নি, যেটি ভারতের আইন লঙ্ঘন করেছে। এক্স আরও জানিয়েছে, ‘অনেক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই আমাদের কাছে প্রমাণ বা ন্যায্য কারণ দেওয়া হয়নি কেন সেগুলো ব্লক করতে হবে।’
মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে এক্স বলেছে, তারা ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষা ও আইন মেনে চলার মধ্যে সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তবে তারা পরিষ্কার করেছে, আদালতের আদেশ বা আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতার কারণে তারা এই অ্যাকাউন্ট ব্লক করছে, যদিও তারা আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
‘আদেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে, আমরা শুধু ভারতের মধ্যেই নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলো স্থগিত রাখব। আমরা ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। তবে, আমরা ভারত সরকারের এই দাবির সঙ্গে একমত নই। পুরো অ্যাকাউন্ট ব্লক করা শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, এটি বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের বিষয়বস্তুর উপর সেন্সরশিপ চাপিয়ে দেওয়ার শামিল, যা মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।
এক্স তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক পোস্টে আরও উল্লেখ করেছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়, তবে ভারতে এই প্ল্যাটফর্মটি সক্রিয় রাখা ভারতীয়দের তথ্যপ্রাপ্তির সক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোম্পানির জন্য যেসব আইনি পথ খোলা আছে, সেগুলোর সবকটিই তারা অনুসন্ধান করছে।
ভারতে অবস্থানরত ব্যবহারকারীদের মতো এক্স-এর পক্ষে এই নির্বাহী আদেশগুলোর বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ জানানো ভারতীয় আইনের কারণে সীমাবদ্ধ।
তবে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘এই ব্লকিং আদেশগুলোর দ্বারা যেসব ব্যবহারকারী প্রভাবিত হচ্ছেন, আমরা তাদের উপযুক্ত আদালত থেকে প্রয়োজনীয় প্রতিকার (relief) নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছি।’