যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ফারাক্কা বাঁধে সম্প্রতি যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া চালিয়েছে ভারতের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী। শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে অবস্থিত ত্রিশক্তি কর্পসের পরিকল্পনায় ৭ ও ৮ আগস্ট গঙ্গা নদীতে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গার ওপর অবস্থিত ফারাক্কা বাঁধ পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যা উত্তরবঙ্গ, বিহারের কিছু অংশ ও পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এখান থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর গঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল জলপথে বিশেষ বাহিনীর প্রবেশ ও কৌশলগত স্থাপনা সুরক্ষার অনুশীলন, পাশাপাশি তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা। এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ‘মহড়ায় প্রদর্শিত দলগত দক্ষতা তিন বাহিনীর উচ্চমাত্রার প্রস্তুতির প্রমাণ। স্থল, জল ও আকাশ—সবক্ষেত্রে আমরা সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।’
গত এক বছরে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের বিভিন্ন স্থানে ভারতের তিন বাহিনীর যৌথ মহড়াসহ বহু প্রতিরক্ষা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা সূত্র জানায়, বিশেষ করে ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত কৌশলগত এলাকায় যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি যাচাই করা এসব মহড়ার লক্ষ্য।
শিলিগুড়ি করিডোর নামে পরিচিত এই এলাকা ভারতের ভূখণ্ডের সবচেয়ে সরু অংশ, যার উত্তরে নেপাল, দক্ষিণে বাংলাদেশ এবং প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে চীনের সীমান্ত রয়েছে। একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘উত্তর-পূর্বে চীনের তৎপরতা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ও পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিবর্তন এই অঞ্চলে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সতর্ক করেছে। এসব মহড়া প্রমাণ করে যে আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।’