ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৩০ জান্তা সৈন্য নিহত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
মিয়ানমারে সংঘাত। ছবি - সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকফিউ টাউনশিপে আরাকান আর্মি (এএ)-র একটি অ্যাম্বুশে অন্তত ৩০ জান্তা সৈন্য নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ইরাবতী। এ ছাড়াও ওই এলাকায় এখনো সংঘাত চলছে।

গত শনিবার ভোরে ঘটেছে এই ঘটনা। তবে নিহতের সংখ্যা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি।

ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি থাইন চাউং তাউং সামরিক ঘাঁটি দখলের পর এলাকায় অগ্রসর হচ্ছিল জান্তা বাহিনী। এ সময় (এএ) কৌশলে মিনপিন গ্রামের চারপাশে মাইন পুঁতে এলাকা ছেড়ে দেয়। সৈন্যরা যখন গ্রামটিকে নিরাপদ ভেবে ঢুকে পড়ে এবং দলবেঁধে ছবি তুলতে শুরু করে, তখনই (এএ) আচমকা হামলা চালায়।

সূত্র জানায়, মাইনে পা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণে বহু সৈন্য নিহত হয়। আহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

এদিকে মিনপিনের আশপাশে এখনো তীব্র লড়াই চলছে। জান্তা বাহিনী সেখানে বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং ড্রোন ব্যবহার করছে। কিয়াউকফিউ-রাম্রি সড়কের এই গ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ থাইন চাউং তাউং ঘাঁটি থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে। এলাকাটিতে চীনের বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প থাকায় এই অঞ্চল সামরিকভাবে সংবেদনশীল।

স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, চলতি মাসেই শাসকগোষ্ঠী ওই এলাকায় ১ হাজারের বেশি নতুন সৈন্য পাঠিয়েছে, এদের অধিকাংশই জোরপূর্বক নিয়োগপ্রাপ্ত। কিয়াউকফিউতে সেনাবাহিনীর তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং তিনটি নৌঘাঁটি রয়েছে। এ ছাড়া চীন জান্তা বাহিনীকে ড্রোন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে বলে দাবি করা হলেও, এই তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

তীব্র সংঘাতের কারণে আশপাশের বহু গ্রাম খালি হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে বাঁচতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় সাহায্যকর্মীরা জানিয়েছেন, চলমান বিমান হামলা ও নৌবাহিনীর গোলাগুলিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বড় সংকট খাদ্য, পাশাপাশি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিয়াউকফিউতে পৌঁছাতে দিচ্ছে না জান্তা বাহিনী। ফলে শহর ও গ্রামগুলোতে তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে রাখাইনের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টিতেই আরাকান আর্মির পূর্ণ বা আংশিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। জান্তা বাহিনী এখনো সিত্তে, কিয়াউকফিউ ও মানাউং টাউনশিপে অবস্থান ধরে রেখেছে, তবে কিয়াউকফিউতেই সবচেয়ে বড় চাপে আছে সামরিক সরকার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করছে।