আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) সভাপতি মিরজানা স্পোলজারিকের মতে, পৃথিবীর জাহান্নামের চেয়েও গাজার অবস্থা খারাপ হয়ে উঠেছে। জেনেভায় আইসিআরসি সদর দপ্তরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় স্পোলজারিক বলেন, ‘মানবতা ব্যর্থ হচ্ছে। রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধ বন্ধ করতে, ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা হরণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে, তা যেকোনো গ্রহণযোগ্য আইনি, নৈতিক এবং মানবিক মানকে ছাড়িয়ে গেছে। গাজার বর্তমান অবস্থা পৃথিবীর জাহান্নামের চেয়েও ভয়াবহ রকমের খারাপ।’
স্পোলজারিক আরও বলেন, যুদ্ধের নিয়ম সব পক্ষের জন্য প্রযোজ্য।
আইসিআরসি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করে। গাজায় সংস্থাটির ৩০০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি বলে জানা গেছে। আইসিআরসি জেনেভা কনভেনশনের রক্ষক হিসেবে বিবেচিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সম্মত চতুর্থটি যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
দক্ষিণ গাজার রাফায় অবস্থিত আইসিআরসির সার্জিক্যাল হাসপাতালটি সেই এলাকার সবচেয়ে কাছের চিকিৎসা কেন্দ্র। হাসপাতালে গত কয়েকদিনে ‘অনিয়মতান্ত্রিকভাবে’ ত্রাণ বিতরণের সময় অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ করেছিল ইসরায়েল ও মার্কিন-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)।
আইসিআরসি জানিয়েছে, গতকাল সকালে তাদের রাফাহ সার্জিক্যাল টিম ১৮৪ জন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে, যার মধ্যে ১৯ জন পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মারা গেছেন এবং আটজন আহত হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মারা গেছেন। এক বছরেরও বেশি সময় আগে ফিল্ড হাসপাতালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি ছিল একটি ঘটনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক হতাহতের ঘটনা।
এদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বুধবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। প্রস্তাবে সব পক্ষকে যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি হামাসসহ অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে থাকা সব জিম্মিকে দ্রুত ও শর্তহীন মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরের পর এটি হবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রথম ভোট, যা আগে যুক্তরাষ্ট্র আটকে দিয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :