আমাদের (ইসরায়েল) অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠছিল ইরান। কিন্তু ইরান যেন আমাদের (ইসরায়েল) ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য আমরা আগেই হামলা চালিয়েছি বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান ইয়াল জামির।
শুক্রবার (২০ জুন) এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।
ইসরায়েলের সেনাপ্রধান ইয়াল জামির বলেন, ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে দীর্ঘসময় ধরে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ইরান। গত কয়েক মাসে পরিকল্পনাটি এমন জায়গায় পৌঁছায়, যেখান থেকে ফেরার সুযোগ ছিল না। তারা হামলা চালানোর সক্ষমতায় পৌঁছেছিল।
তিনি বলেন, আমরা যখন ইরানে হামলা শুরু করেছি তখন তাদের কাছে ২ হাজার ৫০০টি সারফেস টু সারফেস মিসাইল ছিল। হামলা না করলে উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতার কারণে দুই বছরের মধ্যে তাদের কাছে ৮ হাজার মিসাইল থাকত।
ইয়াল জামির বলেন, ইরানের সক্ষমতা ধ্বংস করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। এজন্য আমাদের দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) অস্ত্র নিয়ে কার্গো বিমান ইসরায়েলে অবতরণ করে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে এ পর্যন্ত ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলাকালে মোট ১৪টি অস্ত্রভর্তি কার্গো বিমান ইসরায়েলে পৌঁছেছে। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর মোট ৮০০টি কার্গো অস্ত্রবাহী উড়োজাহাজ এসেছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ পরিচালনায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও ভবিষ্যতের জন্য মজুত জোরদার করাই এই সরবরাহের মূল লক্ষ্য। তবে নতুন চালানে কী ধরনের অস্ত্র এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এমন সময় এই চালানের খবর এলো, যখন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে ব্যবহৃত ইসরায়েলের ‘অ্যারো’ ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এ খবর অস্বীকার করেছেন।
যদিও মঙ্গলবার (২৭ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানায়, যোহান (জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোহান ওয়াডেফুল) বলেছেন, মানবিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র বার্লিন রপ্তানি করবে না। এটি গাজার পরিস্থিতি নিয়ে জার্মানির এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ।
এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলে আক্রমণ করলে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে ইরান একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়ছে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। তবে ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা মজুত ফুরিয়ে আসার তথ্য শোনা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর চেষ্টাও করেছে ইসরায়েল।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা আন্তর্জাতিক বিশ্বে সমালোচিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :