মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ১২ দিন ধরে চলা ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ অবসানে বিজয় উৎসবে মেতে উঠেছে ইরানবাসী। রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে আনন্দ মিছিল।
যুদ্ধবিরতির বার্তা ট্রাম্প তার নিজস্ব মালিকানাধীন সামাজিক যোগামাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে দেন। তিনি উভয় রাষ্ট্রকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন না করারও অনুরোধ জানান।
এর পরই ইরানের শীর্ষ নেতারা একে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে আখ্যা দেন। আনন্দ উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে স্লোগানে মেতে ওঠে তেহরান। আগুন জ্বালিয়ে উদযাপন করা হয় ‘বিজয়’।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিজয় মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইরানের সহ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেন, ‘এই বিজয়ের মাধ্যমে ইরান শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনেও প্রমাণ করেছে- আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তির শিং ভেঙে দেওয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে। এটাই ইরানের প্রকৃত শক্তির বহিঃপ্রকাশ।’
এদিকে ইরানের সংসদের স্পিকার ও প্রাক্তন আইআরজিসি (ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড) কমান্ডার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফের উপদেষ্টা মাহদি মোহাম্মাদি একে একটি যুগান্তকারী বিজয় বলে মন্তব্য করেছেন। এক্সে দেওয়া বার্তায় তিনি লিখেছেন, একটি নতুন যুগের সূচনা হলো।
পারমাণবিক ইস্যুতে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে, পারমাণবিক শক্তি অধিদপ্তরের মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি জাতীয় টেলিভিশনে বলেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেউ উপড়ে ফেলতে পারবে না। আমাদের সক্ষমতা ও বিজ্ঞানভিত্তিক অগ্রগতির কারণে এই খাত আর কখনো থেমে থাকবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি ইরানের জন্য কৌশলগতভাবে একটি সফলতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এতে সরাসরি সংঘাত থেকে সরে এসে ইরান একটি ‘শক্ত অবস্থান’ নিয়ে আলোচনায় বসার সুযোগ পেয়েছে। পাশাপাশি নিজ দেশের জনগণের কাছে নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও কূটনৈতিক দক্ষতা তুলে ধরার সুযোগও তৈরি হয়েছে।
এদিকে ইরানের শহরগুলোতে বিজয় উদযাপনে মুখর জনগণ। রাস্তায় নেমে তারা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’ ইত্যাদি স্লোগানে দিচ্ছেন। বহু জায়গায় দেখা গেছে পতাকা মিছিল, ধর্মীয় সংগীত ও বিপ্লবী স্লোগান।
আপনার মতামত লিখুন :