ইসরায়েলের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া বৈধ বলে রায় দিয়েছেন ব্রিটেনের হাইকোর্ট। যদিও স্বীকার করা হয়েছে, এই যন্ত্রাংশ গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার হতে পারে।
তবু আদালত বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত সরকারের মন্ত্রীদের বিষয় ও এতে আদালতের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।
সোমবার (৩০ জুন) ঘোষিত এই রায় ব্রিটিশ সরকারের জন্য এক বড় স্বস্তির বিষয়। রায়ের ফলে ইসরায়েলের কাছে সব ধরনের অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ২০ মাস ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটল। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
যৌথভাবে মামলাটি দায়ের করেছিল গ্লোবাল লিগ্যাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (জিএলএএন), মানবাধিকার সংস্থা আল-হক, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফাম।
৭২ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক লর্ড জাস্টিস মেলস ও জাস্টিস স্টেইন বলেন, এ ধরনের একটি রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের, আদালতের নয়।
তারা আরও বলেন, মামলার মূল বিষয় ছিল শুধু গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থেকে এফ-৩৫ যন্ত্রাংশ বাদ দেওয়ার বিষয় নয়, এটা ছিল আরও বড় পরিসরের একটি নীতিগত প্রশ্ন।
অন্যদিকে ব্রিটেনের মন্ত্রীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, যন্ত্রাংশ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে পুরো এফ-৩৫ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে ন্যাটো ও ইউরোপের নিরাপত্তার ওপর আরও ব্যাপক প্রভাব পড়বে। বিচারকরা যুক্তরাজ্যের এই যুক্তি মেনে নিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর ইসরায়েলের কাছে যন্ত্রাংশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী হলো যুক্তরাজ্য।
ইসরায়েলে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচারিক পর্যালোচনার আবেদনটি প্রথম শুরু হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু পরে সেপ্টেম্বরে লেবার সরকার ক্ষমতায় এসে ইসরায়েলের জন্য ৩০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্স বাতিল করলে মামলাটি অনেকটা সীমিত হয়ে যায়।
এরপর মে মাসে চার দিন ধরে যে শুনানি হয়, তা শুধু এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ রপ্তানি অনুমোদনের (যাকে ‘কার্ভ-আউট’ বলা হয়) বিষয়েই কেন্দ্রীভূত ছিল। এই শুনানিতে রক্ষণশীল সরকারের সময় নেওয়া অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :