বিশ্বব্যাপী ট্রাম্প নেতানিয়াহুর কদর থাকলেও তাদের সামনে মাথানত করেননি খামেনি। এমনকি খামেনির সম্পদ দিয়ে বহুবার ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে কিনতে পারবেন এমন তথ্য একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ট্রাম্পের বিশ্ব মোড়লগিরি ও নেতানিয়াহুর অন্যায় আগ্রাসন এবং দখলদারির বিরুদ্ধে সবাই চুপ থাকলেও কঠোর প্রতিরোধের প্রথম সুর শুনতে পাওয়া যায় খামেনির কণ্ঠে।
এমনকি অন্যান্য মুসলিম নেতাদের প্রতি অভিযোগ তুলে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘আরব শাসকরা নীরবে গাজার রক্ত বিক্রি করছে’।
১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতার পদবিতে আছেন খামেনি। যদিও তার ব্যক্তিগত জীবনে নেই তেমন জৌলুস বা বিলাসিতা, তার সম্পদের পরিমাণ চমকে দেবে যে কাউকে। এমনকি মার্কিন ও ইসরায়েলি নেতারাও তাকে জিজ্ঞাসা করেছেন—তিনি কতটা ধনী?
খামেনির সহজ সরল জীবনযাপনের পেছনে রয়েছে অসংখ্য সরকারের বাজেয়াপ্ত সম্পদ। এসব বাজেয়াপ্ত সম্পদ ইসলামি নামের অধীনে ব্যবহারের জন্য ‘সেতাদ’ নামের এক সংস্থা পরিচালনা করেন। পশ্চিমা অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সংস্থার পরিচালিত সম্পদ পরিসর ৯৫ বিলিয়ন থেকে বাড়তে বাড়তে ২০০ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে।
২০১৩ সালের রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেতাদের দখলে রয়েছে প্রায় ৫২ বিলিয়ন মূল্যের আবাসন প্রকল্প (রিয়েল এস্টেট) ও প্রায় ৪৩ বিলিয়ন মূল্যের বাণিজ্যিক শেয়ার । তবে, ‘সেতাদ’ সংস্থায় সম্পদের পরিমাণের সত্যতা ও এতে খামেনির মালিকানা এখনো অপরিষ্কার। তবে নীতিগতভাবে সে সম্পদ তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মার্কিন কর্মকর্তাদের অনুমান অনুসারে, ২০১৯–২৫ সালের মধ্যে এই সম্পদের পরিমাণ ২০০ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। যদিও এটি প্রমাণিত তথ্য নয়, তবে তাঁর ক্ষমতা–ঘনিষ্ঠ অনেকেই এ ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
একদিকে, পশ্চিমারা দাবি করে যে, এসব সম্পদ–ব্যবহার রাষ্ট্রের, সংসদ বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবহির্ভূত। এসব রাজনৈতিক বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা ব্যবহৃত হয় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য। অন্যদিকে, খামেনির স্বয়ং ব্যক্তিগত জীবন অতিশয় সাধার—বিলাসভোগশূন্য, রাজকীয় প্রাসাদ বা ব্যক্তিগত বিমান–নিজের জন্য একটিও নেই।
মধ্যপ্রাচ্যের কর্মকর্তাদের দাবি খামেনি অত্যন্ত সহজ সরল ও ধর্মভিত্তিক জীবনযাপন করেন এবং তার আশপাশে সংগৃহীত সম্পদ, যেগুলোর ওপর তার নিয়ন্ত্রণ, সেগুলো শুধু ব্যক্তিগত নয় বরং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কাঠামোর উপরে নজরদারি ক্ষমতা জোরদার করে।
আপনার মতামত লিখুন :