ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

আদিয়ালা কারাগারে যেসব সুবিধা পাচ্ছেন ইমরান খান

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান। ছবি- সংগৃহীত


পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের আদিয়ালা কারাগারে ২০২৪ সাল থেকে কয়েদি হিসেবে আছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান। বর্তমানে পাকিস্তানের বিভিন্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে যত মামলা চলছে, তাতে হয়তো আরও বহুদিন এই কারাগারে থাকতে হবে।

আদিয়ালা কারাগারসূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের এক গণমাধ্যম জানিয়েছে , কিংবদন্তি ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান কাগজে-কলমে ‘বি ক্লাস’ ক্যাটাগরিভুক্ত কয়েদি হিসেবে আছেন আদিয়ালায় এবং কয়েদি হিসেবে তিনি এমন কিছু সুবিধা পাচ্ছেন, যা অন্যান্য ‘বি ক্লাস’ কয়েদিরা ভোগ করেন না।

যেমন, ইমরান খানকে একটি স্বতন্ত্র সেলে রাখা হয়েছে এবং সেই সেলটি ডুপ্লেক্স বা দ্বিতল। সেই সেলে এলইডি বাতির ব্যবস্থা আছে, পত্রপত্রিকা এবং নিজের পছন্দসই বইপত্র পড়া ও রাখার অনুমতি আছে, শারীরিক ব্যায়ামের জন্য হাঁটাচলা এবং সাইক্লিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। এ কারাগারে ইমরানের পছন্দ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সকালের নাশতা এবং দুপুর ও রাতের খাবার রান্নার জন্য দাপ্তরিকভাবে একজন কয়েদিকে নিয়োগ দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া, কারাগারের ভেতরে ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি নেই ইমরান খানের, তবে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোট ৪১৩টি এক্সবার্তা পোস্ট করেছেন ইমরান খান। ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচন, শিয়ালকোটের উপনির্বাচন এবং দলের অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব বাছাই সংক্রান্ত নির্বাচন—প্রতিটি ইভেন্টে এক্সবার্তার মাধ্যমে দলের কর্মী-সমর্থকদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমেও তার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালের আগস্টে আদিয়ালায় অন্তরীণ হওয়ার পর এক বছরেরও কম সময়ে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে অন্তত ৪৫ বার পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংবাদমাধ্যমগুলোর শীর্ষ সংবাদ হয়েছে তার বিভিন্ন বক্তব্য। এ ছাড়া গত দু’বছরে দ্য টেলিগ্রাফ, রয়টার্স, আইটিভি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ফক্স নিউজসহ অন্তত ১০টি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইমরান খান।

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঝুঁকি থাকায় ইমরান খানকে আদালতে নেওয়া হয় না। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়ার জন্য আদিয়ালা কারাগারেই বসে আদালতের বেঞ্চ। আদালতের শুনানির সময় কারাকক্ষ থেকে বের করা হয় ইমরান খানকে। সে সময় সরাসরি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান তিনি।

দর্শনার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতেও সেভাবে বাধা দেওয়া হয় না ইমরান খানকে। কারাগারের নথি থেকে জানা গেছে, গত তিন মাসে অন্তত ৬৬ জন দর্শনার্থী ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই দর্শনার্থীদের মধ্যে পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতা, পার্লামেন্ট সদস্য ও আইনজীবীরা রয়েছেন।

কারাগারের ডাক্তাররা নিয়মিত তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। মাঝে মাঝে দিনে তিনবার হয় এই পরীক্ষা। গত দু’সপ্তাহের মেডিক্যাল রেকর্ড থেকে জানা গেছে, ইমরান খান শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।

প্রতিদিন কারাগারের বাইরে মুক্ত বাতাসে ২ ঘণ্টা শরীরচর্চা করেন ইমরান খান।