মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৩:০৪ এএম

কঙ্গো-রুয়ান্ডার শান্তি চুক্তি, খনিজ সম্পদ লুটের ধান্ধায় ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৩:০৪ এএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।       ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

আফ্রিকার খনিজ-সমৃদ্ধ দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোকে ঘিরে শুরু হয়েছে এক নতুন ভূরাজনৈতিক মেরুকরণ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্ব দিচ্ছেন একটি উচ্চাভিলাষী শান্তি উদ্যোগে, যার লক্ষ্য কঙ্গো-রুয়ান্ডা দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে অঞ্চলটিতে মার্কিন শিল্প ও প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের প্রবাহ নিশ্চিত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, ডিআর কঙ্গোর খনিজ রিজার্ভের আনুমানিক মূল্য ২৫ ট্রিলিয়ন ডলার। কোবাল্ট, লিথিয়াম, কপার, ম্যাংগানিজ, ও ট্যান্টালামের মতো খনিজ এখানে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়-যা বৈদ্যুতিক যান, মোবাইল ফোন, এআই প্রযুক্তি ও সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে অপরিহার্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কঙ্গোর খনিজের বড় অংশ ইতিমধ্যেই চীনা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। তাই মার্কিন প্রশাসনের এই শান্তি উদ্যোগ আসলে এক ধরনের ‘ভূরাজনৈতিক ধাওয়া’, যেখানে আমেরিকা এখন চীনকে টপকানোর চেষ্টা করছে।

এই শান্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে কাতার ও সৌদি আরব। কাতার বিশেষভাবে এম২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে, যাদের রুয়ান্ডার সঙ্গে অঘোষিত সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে, সৌদি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আফ্রিকায় তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারে আগ্রহী।

২৭ জুন ওয়াশিংটনে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি অনুযায়ী, কঙ্গো ও রুয়ান্ডা ৩০ দিনের মধ্যে একটি ‘নিরাপত্তা সমন্বয় কাঠামো’ চালু করতে সম্মত হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণ খনিজ আহরণের সুবিধা দেবে, কঙ্গো কতটুকু লাভবান হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ডিআর কঙ্গোর সরকার মুখে বলছে, তারা নিরাপত্তা বিনিময়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ করতে প্রস্তুত। তবে বাস্তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে সার্বভৌমত্ব বিসর্জনের ঝুঁকি তৈরি করছে বলে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার খনিজ আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হেনরি মোস্টার্ট।

মার্কিন কোম্পানিগুলো এখন পর্যন্ত কঙ্গোতে বিনিয়োগে পিছিয়ে ছিল মূলত মানবাধিকার ও নিরাপত্তা ইস্যুতে। এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী পূর্ব কঙ্গো দখল করে সেখানকার খনিজ রুয়ান্ডার মাধ্যমে পাচার করছে বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। রুয়ান্ডা যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তথাপি দেশটির হাজারো সৈন্য কঙ্গোতে রয়েছে।

মার্কিন-মধ্যস্থতায় যদি কঙ্গো ও রুয়ান্ডা একমত হয়ও, তবু প্রশ্ন রয়ে যাবে এম২৩ বিদ্রোহীদের ভূমিকা নিয়ে। এম২৩ পরিষ্কারভাবে বলেছে, তারা কঙ্গো সরকারের শাসন মেনে নিলেও ‘এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না’। সেক্ষেত্রে সহ-শাসন কিংবা ধাপে ধাপে ক্ষমতা হস্তান্তরের মতো বিকল্প ভাবতে হচ্ছে।

কানাডাভিত্তিক বিশ্লেষক জেসন স্টিয়ার্নসের মতে, একাধিক প্রক্রিয়া (যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের আলাদা মধ্যস্থতা) একে অপরের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তিনি বলেন, একটি পক্ষ এম২৩ এর সঙ্গে চুক্তি করল, অন্য পক্ষ বলছে তারা এম২৩ নিয়ন্ত্রণ করে না-এই দ্বৈততা সংঘর্ষ বাড়িয়ে তুলবে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কঙ্গো বিশ্লেষক অনেসফোর সেমাতুম্বা মনে করেন, চুক্তি স্বাক্ষর আর বাস্তব শান্তির মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে। এটি কেবল কূটনীতি নয়-মানুষের ক্ষত, লুটপাটের ইতিহাস এবং অংশগ্রহণের সংস্কৃতি বিবেচনায় না আনলে ট্রাম্পের এই চুক্তি টিকবে না।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!