বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য উচ্চমানের ও ঝামেলামুক্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীনের ইউনান প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল’ পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের এ আশ্বাস দেন প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ও স্থানীয় সরকারি হাসপাতালের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা।
ইউনান প্রাদেশিক স্বাস্থ্য কমিশনের উপপরিচালক ওয়াং জিয়ানকুন বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক রোগীদের ন্যায্যমূল্যে উচ্চমানের সেবা দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের পাইলট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা গ্রহণ করা বাংলাদেশি রোগীরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। বাংলাদেশি রোগীদের সহায়তায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার এবং ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা খাতে সহযোগিতা জোরদারে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।’
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীন সরকারের আমন্ত্রণে ২৩ সদস্যের বাংলাদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদল চীন সফর করছে। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী এক ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে অংশ নেয়।
সেশনে অংশ নেন হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট জেং ঝিং, মেডিকেল প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক শি হংবিন এবং আন্তর্জাতিক মেডিকেল বিভাগের পরিচালক হান রুইসহ আরও অনেকে। তারা প্রতিনিধি দলের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রশ্নগুলোর মধ্যে ছিল ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, রোগীর স্বজনদের থাকার ব্যবস্থা, যাতায়াত ব্যয়, বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ, লিয়াজোঁ অফিসের কার্যক্রম, ফলো-আপ চিকিৎসা, বিল পরিশোধ প্রক্রিয়া ও মৃত্যুর পর মরদেহ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ ইত্যাদি।
ওয়াং জিয়ানকুন আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি রোগীদের সম্মুখীন হওয়া বাস্তব সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত এবং তা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
প্রতিনিধি দলের প্রধান আবুল কালাম আজাদ মজুমদার চীনা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, ‘যেন তারা কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেন।’
তিনি বলেন, ‘এতে ভবিষ্যতে ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা সহজতর হবে।’
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ছয় মাসে কুনমিংয়ের এই হাসপাতালে লিভার সিরোসিস, স্তন ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ৬৭ জন বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
এছাড়া, চীনের স্থানীয় ফরেন অফিস কর্তৃক আয়োজিত ভোজসভায়ও বাংলাদেশি রোগীদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। প্রতিনিধি দলটি আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) কুনমিংয়ের আরও কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :