ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপে ফেলতে চীন ও ভারতের ওপর সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। বৈঠকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
এই প্রস্তাব এমন সময় এসেছে যখন ট্রাম্প রাশিয়া–ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে হিমশিম খাচ্ছেন এবং রুশ হামলা ইউক্রেনে আরও তীব্র হচ্ছে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। এর আগে গত সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের প্রধান সরকারি ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এটিকে আগ্রাসনের নতুন মাত্রা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, মঙ্গলবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক অঞ্চলের ইয়ারোভা গ্রামে রুশ বিমান হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে এ হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, নিহতরা সবাই ছিলেন সাধারণ বেসামরিক মানুষ, যারা সেদিন পেনশন তুলতে গিয়েছিলেন।
এদিকে, ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরও বলেন, তিনি পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন এবং ক্রেমলিনের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দেন। যদিও অতীতে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, বাস্তবে সেসব প্রায় কার্যকর হয়নি। গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প–পুতিন শীর্ষ বৈঠকও কোনো শান্তিচুক্তি ছাড়াই শেষ হয়।
ট্রাম্পের প্রস্তাব আসে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের মন্তব্যের পর। তিনি বলেছিলেন, ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে প্রস্তুত, তবে ইউরোপের সমর্থন প্রয়োজন।
একই সঙ্গে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যসংক্রান্ত আলোচনা চলছে। তিনি শিগগিরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলবেন এবং আলোচনার ‘সফল সমাপ্তি’ আশা করছেন।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনের জন্য আরোপ করা হয়।
চীন ও ভারত রাশিয়ার তেল কেনার প্রধান ক্রেতা, যা রুশ অর্থনীতিকে সচল রাখছে। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর কথা বললেও এখনো তাদের প্রায় ১৯ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস রাশিয়া থেকেই আমদানি হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন