গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লন্ডনের মর্যাদাপূর্ণ সরকারি প্রতিরক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসরায়েলি নাগরিকদের ভর্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত রয়াল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজ আগামী বছর থেকে ইসরায়েলি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ করবে।
কলেজের ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, যুক্তরাজ্যের ডিফেন্স একাডেমির অংশ এই স্নাতকোত্তর কলেজটি সশস্ত্র বাহিনী ও সিভিল সার্ভিসের মধ্যে কৌশলগত চিন্তাবিদ ও নেতৃত্ব তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কিছু কোর্সে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগও রয়েছে।
গত জুনে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা পার্লামেন্টকে জানান, কলেজটি যুদ্ধবহির্ভূত একাডেমিক কোর্সে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পাঁচজনেরও কম সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এএফপি-কে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আমির বারাম সিদ্ধান্তটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং ‘যুদ্ধরত মিত্রের প্রতি অবিশ্বাস’ হিসেবে সমালোচনা করেছেন। নিজেও তিনি এ কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী।
বারাম ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাঠানো এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘সত্যি বলতে, ইসরায়েলের বহিষ্কার ব্রিটিশ নিরাপত্তার স্ববিনাশ ছাড়া কিছু নয়’।
এর আগে ব্রিটেন গাজায় ব্যবহৃত অস্ত্রের অভিযোগে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির কিছু লাইসেন্স স্থগিত করে। তবে ইসরায়েলের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশের মতো যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত কিছু পণ্যকে এ সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে।
গত সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি বৃহৎ অস্ত্র প্রদর্শনীতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তার সরকার ও হামাসবিরোধী যুদ্ধে ইসরায়েলের অবস্থানের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।
তবে প্রদর্শনীতে অংশ নেয় ৫১টি ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, এর মধ্যে ছিল প্রধান প্রতিষ্ঠান এলবিটও। প্রদর্শনীর বাইরে এ নিয়ে ফিলিস্তিনপন্থীরা বিক্ষোভ করেছে। লন্ডন গাজায় ইসরায়েলের প্রায় দুই বছরের সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ‘ভুল’ বলে সমালোচনা করেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন