গাজা শহরে ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাবে গাজায় তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সহায়তার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
পরিষদের ১০টি অস্থায়ী সদস্য দেশ প্রস্তাবটি প্রস্তুত করেছিল। এতে গাজায় প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের পর ‘বিপর্যয়কর’ মানবিক পরিস্থিতির ওপর জোর দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসেবে, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৫ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছেন।
প্রত্যাশিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবে ভেটো দেয়। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-প্রতিনিধি মরগান অর্টাগাস বলেন, ‘এই প্রস্তাব হামাসের প্রতি নিন্দা জানায় না, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার স্বীকার করে না এবং হামাসের পক্ষে ভ্রান্ত বর্ণনাকে বৈধতা দেয়, যা এই পরিষদে দুঃখজনকভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।
ভোটের পর জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, মার্কিন ভেটো ‘গভীরভাবে দুঃখজনক’ এবং এটি নিরাপত্তা পরিষদকে ‘গণহত্যার মুখে বেসামরিকদের রক্ষায় তার যথাযথ ভূমিকা পালনে’ বাধা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, পরিষদ নীরব রয়ে গেছে, যা তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও কর্তৃত্বের জন্য বড় মূল্য ডেকে এনেছে।’
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনদজামা বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা, আমাদের ক্ষমা করবেন। বিশ্ব অধিকারের কথা বলে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এই প্রত্যাখ্যানের দেয়ালে ভেঙে পড়েছে।’
তিনি জানান, গাজায় চলমান যুদ্ধে ১৮ হাজারের বেশি শিশু, ১২ হাজার নারী, ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি চিকিৎসক ও সেবিকা এবং ২৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তার ভাষায়, ইসরায়েল ‘আন্তর্জাতিক আইনের কারণে নয়, বরং বৈশ্বিক ব্যবস্থার পক্ষপাতিত্বের কারণে’ দায়মুক্তি পাচ্ছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের ‘কোনো সাফাইয়ের প্রয়োজন নেই’। তিনি ভেটো দেওয়ার জন্য অরটাগাসকে ধন্যবাদ জানান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন