মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

দক্ষিণ এশিয়ার দেখানো পথেই এবার ইতালির আন্দোলন

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

ইতালির মিলান শহরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতির দাবিতে জড়ো হওয়াদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। ছবি- সংগৃহীত

ইতালির মিলান শহরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতির দাবিতে জড়ো হওয়াদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। ছবি- সংগৃহীত

ইতালির বাণিজ্যিক রাজধানী মিলানে সাম্প্রতিক এক সহিংস আন্দোলন নতুন করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে এই আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।

মিলানে অনুষ্ঠিত গাজা সংহতি বিক্ষোভে অংশ নেয় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। আন্দোলন শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও কয়েকজনকে আটক করার চেষ্টা করলে তা সহিংস রূপ নেয়। ঘটনায় অন্তত ৬০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য আহত হন। প্রায় ১০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চরম বামপন্থি গোষ্ঠী ও কিছু অভিবাসী গ্যাংও ছিল। তারা মিলানের রাস্তায় ব্যাপক শোডাউন চালায় এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও সড়ক অবরোধ করে। এতে জনজীবনে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে ইতালির সংবাদমাধ্যম করিয়ের ডেলা সেরা।

কয়েক ঘণ্টার বিক্ষোভের পর ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও কর্মীরা মূল হলের সামনে জড়ো হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুহূর্তেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় অবস্থা। অনেক ছাত্র, বাসিন্দা ও অধ্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তায় ভুগে স্থান ত্যাগ করেন। ধর্মঘটের কারণে শহরের অস্থিরতা আরও বাড়ে, সন্ধ্যা ৬টা থেকে এম-১ ও এম-৩ সাবওয়ে লাইন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ঘটনা শুধু একটি আন্দোলন নয়; বরং এটি ইউরোপে সাম্প্রতিক অভিবাসন সংকট ও রাজনৈতিক মতাদর্শের সংঘাতকে প্রতিফলিত করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো (শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপাল) এর আগে অভিবাসীদের মানবাধিকার, রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। সেই ধারার প্রতিচ্ছবিই এখন ইতালিতে ফুটে উঠছে, যেখানে নতুন প্রজন্মের অভিবাসী ও বামপন্থি কর্মীরা সক্রিয়ভাবে রাস্তায় নামছেন।

তবে ইতালির পরিস্থিতি অন্য কারণে আরও স্পর্শকাতর। জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকার অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সরকার বলছে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলে সেটি ‘সন্ত্রাসের বৈধতা’ দেবে। তাই তারা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অন্যদিকে, ফ্রান্স জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে ভিন্ন বার্তা দিয়েছে, যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

মিলানের এ আন্দোলনের চেহারা তাই কেবল ফিলিস্তিন ইস্যুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি অভিবাসী সমাজের রাজনৈতিক ভূমিকা, বর্ণ বৈষম্য এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের দূরত্বের প্রতিফলন। বিশেষ করে ইতালিতে ক্রমবর্ধমান মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী জনগোষ্ঠী এখন এক নতুন রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ নিচ্ছে। তারা আর নীরব থাকছেন না; বরং নিজেদের দাবি ও অধিকারের জন্য সোচ্চার হচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় জন্ম নেওয়া আন্দোলনের চেতনা ও কৌশল ইউরোপে নতুন রূপ পাচ্ছে। বাংলাদেশে যেমন শিক্ষার্থীরা কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিকরা অধিকার আদায়ে রাস্তায় নামেন, সেভাবেই ইউরোপে অভিবাসীরাও সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সংগঠিত হচ্ছেন। এই আন্দোলন ভবিষ্যতে ইতালির রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলবে। তবে এখনই স্পষ্ট যে, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের মতো দেশগুলোর ‘রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ’ কৌশল ইতালিতেও ছড়িয়ে পড়ছে। আর এর প্রভাবে ইউরোপীয় রাজনীতির ভারসাম্য নড়বড়ে হয়ে উঠছে।

Link copied!