আকাশে ‘রহস্যময়’ ড্রোন দেখা যাওয়ায় ফের বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করল ডেনমার্ক। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার অজ্ঞাত ড্রোনের কারণে বিমানবন্দর বন্ধ করা হলো ইউরোপীয় দেশটিতে। এর আগে, গত সোমবার দেশটির প্রধান কোপেনহেগেন বিমানবন্দরও একই কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এতে বলা হয়, বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় জুটল্যান্ডের আলবর্গ বিমানবন্দরের আকাশসীমায় একাধিক ড্রোন দেখা গেলে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪৪ মিনিটে প্রথম ড্রোনগুলো শনাক্ত হয় এবং কয়েক ঘণ্টা আকাশে অবস্থান করে। এসব ড্রোন আলোকসজ্জাসহ উড়ছিল বলে জানায় পুলিশ। ইউরোকন্ট্রোল জানায়, ড্রোনের কারণে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত আলবর্গ বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকে।
এ ঘটনায় দেশটির সশস্ত্র বাহিনীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ আলবর্গ বিমানবন্দর সামরিক ঘাঁটি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। পুলিশ বলেছে, এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি কে বা কারা এসব ড্রোন পাঠিয়েছে কিংবা এর উদ্দেশ্য কী। তবে সম্ভব হলে ড্রোন নামানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ জানায়, আলবর্গ ছাড়াও পশ্চিমাঞ্চলের এসবিয়ার্গ, সোনডারবর্গ ও স্ক্রিডস্ট্রুপ এলাকার বিমানবন্দরের কাছেও ড্রোন দেখা গেছে। বিশেষ করে স্ক্রিডস্ট্রুপ ঘাঁটিতে ডেনমার্কের এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে।
কোপেনহেগেন বিমানবন্দরের ঘটনার পর ডেনমার্ক সরকার বলেছিল, এটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর সবচেয়ে বড় আক্রমণগুলোর একটি এবং সম্ভবত ইউরোপজুড়ে রাশিয়ার সন্দেহভাজন ড্রোন তৎপরতার অংশ। নরওয়েতেও সোমবার সন্ধ্যায় অসলো বিমানবন্দর তিন ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখতে হয় ড্রোন আতঙ্কে।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন মঙ্গলবার বলেন, কোপেনহেগেন ঘটনার পেছনে রাশিয়া থাকতে পারে, এটি একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ অভিযোগকে ‘অমূলক’ বলে দাবি করেছেন।
এদিকে, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, এটি আমাদের সীমান্তে চলমান এক ধারাবাহিক চ্যালেঞ্জেরই অংশ। ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে রয়েছে, আর ইউরোপ শক্তভাবে এর জবাব দেবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার ড্রোন ঢোকার ঘটনায় পোল্যান্ডের চারটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ন্যাটো সদস্যরা সীমান্ত প্রতিরক্ষা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন