বেশকিছু দিন ধরেই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার নিয়ে প্রবল আগ্রহ দেখা গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তিনি নিজেই অনেকবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের দাবি করেছেন। বলেছেন, বিশ্বজুড়ে সাতটি সংঘাত বন্ধ করেছেন তিনি। সেই হিসেবে এই পুরস্কারের সবচেয়ে বড় দাবিদার তিনি। এমনকি শুধু তিনি নিজেই নন, ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার জন্য মনোনীত করেছে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ।
ইসরায়েল: শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম সুপারিশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি এক বৈঠকে নোবেল পুরস্কার কমিটিকে পাঠানো চিঠির একটি কপি ট্রাম্পকে উপহার দেওয়ার সময় নেতানিয়াহু বলেন, ‘তিনি (প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প) একের পর এক দেশে, একের পর এক অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছেন’।
ইউক্রেন: এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, যদি ট্রাম্প বিশ্বকে—বিশেষ করে ইউক্রেনের জনগণকে—এমন এক যুদ্ধবিরতির সুযোগ দেন, তাহলে হ্যাঁ, তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা উচিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি এবার নোবেল শান্তি পুরস্কার না জেতেন, তাহলে ইউক্রেনের সমর্থনে তিনি আগামী বছর আরেকটি সুযোগ পেতে পারেন। আমরা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাকে মনোনীত করব।
তাইওয়ান: সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-টে বলেছেন, যদি ট্রাম্প চীনকে দ্বীপটির বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ থেকে বিরত রাখতে রাজি করাতে পারেন, তবে তিনি এই সম্মানের যোগ্য।
পাকিস্তান: পাকিস্তানও গত জুনে ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল দেওয়ার জন্য সুপারিশের কথা জানায়। কারণ হিসেবে দেশটি জানায়, এর আগে মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সহায়তা করেছিলেন ট্রাম্প। পাকিস্তান ২০ জুন ঘোষণা করেছিল যে তারা ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেবে।
কম্বোডিয়া: ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট। জুলাইয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে পাঁচ দিনব্যাপী সীমান্ত সংঘাতের পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত হওয়ার পর এ ঘোষণা দেন তিনি।
আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান: আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাসিনিয়ান এবং আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ এক যৌথ চুক্তিতে পৌঁছান। উভয় নেতা মার্কিন পরিচালিত ফ্রেমওয়ার্কের প্রশংসা করেন এবং ট্রাম্পকে মনোনয়নের পক্ষে সমর্থন দেবেন বলে জানান।
রুয়ান্ডা: রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অলিভিয়ার নডুহুংগিরেহ এবং গ্যাবনের রাষ্ট্রপতি ব্রাইস ওলিগুই নগুয়েমা উভয়ই প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। মূলত রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর প্রজাতন্ত্রের মধ্যে দশক ধরে চলা সংঘাত সমাধানে ট্রাম্পের অবদানের জন্য।
জর্জিয়া: জর্জিয়ার রিপাবলিকান প্রতিনিধি বাডি কার্টার একটি চিঠি জমা দিয়েছেন, যাতে ট্রাম্পকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে জুন মাসের যুদ্ধবিরতি ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কিত কার্যক্রমের জন্য মনোনয়নের সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল তিনটায় ২০২৫ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল শান্তি পুরস্কার কে পাচ্ছেন, তা ঠিক করেন নরওয়ের পাঁচ সদস্যের নোবেল কমিটি। এই কমিটির হাতেই রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহু কাঙ্ক্ষিত সম্মাননা পাওয়ার ভাগ্য।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন