ইসরায়েল ১২ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফেরত পাঠানোর কথা থাকলেও এখন তাদের নির্বাসিত করা হবে বলা জানানো হচ্ছে। রোববার রাতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের এই পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব ফিলিস্তিনি তাদের সন্তানদের নির্বাসিত করার কথা আগেই জানতে পেরেছিলেন, তারা গতকাল অধিকৃত পশ্চিম তীর ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমতি দেয়নি। এই মুহূর্তে সেখানে একটি আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এদিকে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সোমবার (১৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার পর জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। গাজায় প্রথম ধাপে সাতজন জিম্মিকে রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিকল্পনা’ মেনে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনার প্রথম ধাপ অনুযায়ী, গত শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এর চতুর্থ দিনে আজ সোমবার মিসরের অবকাযাপন কেন্দ্র শারম আল–শেখে ‘শান্তি’ সম্মেলনে বসছেন বিশ্বনেতারা। সেখানে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ইতিমধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, তাতে ট্রাম্প সই করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিসরে সম্মেলন শুরুর আগেই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আর ঠিক এ সময়টায় ইসরায়েলে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেখান থেকে তার মিসরে যাওয়ার কথা। ইসরায়েল সফরে দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের।
ট্রাম্পের পরিকল্পনার ভিত্তিতে গাজায় যে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি হয়েছে, তার মূল শর্তগুলো হলো—গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা বন্ধ, উপত্যকাটির নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সেনাদের সরিয়ে আনা এবং জিম্মি ও বন্দিবিনিময়। গতকাল রোববার দিনভর বন্দিদের মুক্তি বিষয়ে তৎপরতা চালিয়েছে হামাস ও ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। পরে সেদিন থেকেই গাজায় টানা দুই বছর ধরে নৃশংসতা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ৭ অক্টোবর হামাসের সদস্যরা হামলা চালিয়ে ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান। তাদের ৪৮ জন এখনো উপত্যকাটিতে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত। বাকি ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ১ হাজার ৯৫০ জন ফিলিস্তিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। বন্দিদের মধ্যে ২২ শিশুও রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন