বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার কয়েকদিন পরই ভেনেজুয়েলা ঘোষণা দিয়েছে, তারা নরওয়ের অসলোতে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিচ্ছে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এক সরকারি বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। অন্যদিকে মাচাদোকে দানবীয় ডাইনি বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলা সরকার জানিয়েছে, দূতাবাস বন্ধের এই পদক্ষেপ তাদের বৈদেশিক সেবার পুনর্গঠন পরিকল্পনার অংশ। তবে বিবৃতিতে মাচাদোর নোবেল পুরস্কার নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। কারাকাস অস্ট্রেলিয়ায় তাদের দূতাবাসও বন্ধ করে দিয়েছে। তবে একই সঙ্গে তারা জিম্বাবুয়ে ও বুরকিনা ফাসোতে নতুন ‘কূটনৈতিক ফাঁড়ি’ খুলেছে। ভেনেজুয়েলা এই দেশগুলোকে ‘আধিপত্যবাদী চাপের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৌশলগত অংশীদার বলে মনে করে।
এদিকে, নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার নিশ্চিত করেছে যে, ভেনেজুয়েলা কোনো কারণ না দেখিয়েই অসলোতে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিসিলি রোয়াং এএফপিকে এক ইমেইলে বলেন, ‘এটি দুঃখজনক। বেশ ক’টি বিষয়ে আমাদের মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও নরওয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংলাপ খোলা রাখতে চায় এবং এ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে।’
সোমবার সন্ধ্যার মধ্যেই ভেনেজুয়েলা দূতাবাসের ফোন পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। অসলোতে মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার মাত্র তিন দিন পর ভেনেজুয়েলা এই পদক্ষেপ নিল।
ভেনেজুয়েলার বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল, যেখানে বিরোধীদের তীব্র বিক্ষোভ সত্ত্বেও মাচাদোকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়।
নোবেলের কথা সরাসরি উল্লেখ না করেই রোববার মাদুরো ৫৮ বছর বয়সি এই বিজয়ীকে ‘দানবীয় ডাইনি’ বলে অভিহিত করেন। এই শব্দটি সরকার প্রায়শই ব্যবহার করে থাকে।
অন্যদিকে, অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রচারে তার অক্লান্ত পরিশ্রমও একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তর অর্জনের সংগ্রামের জন্য’ মাচাদোকে সম্মানিত করা হয়েছে।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রোয়াং জোর দিয়ে বলেছেন, ‘নোবেল পুরস্কার নরওয়ে সরকারের ওপর নির্ভরশীল নয়।’
মাচাদো তার নোবেল ‘ভেনেজুয়েলার দুর্দশাগ্রস্ত জনগণ’ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি উৎসর্গ করেছেন।
সোমবার রাতে কলম্বিয়ার বোগোতায় দুই ভেনিজুয়েলার কর্মীকে গুলি করে আহত করার পর তিনি তদন্তের আহ্বান জানান। বোগোতার পুলিশ জানিয়েছে, লুইস আলেজান্দ্রো পেচে ও ইয়েন্দ্রি ভেলাস্কেজ নামে শনাক্ত ওই কর্মীরা বাসে ওঠার সময় গুলিবিদ্ধ হন। মাচাদো এক্সে বলেছেন, তারা ‘নিকোলাস মাদুরোর স্বৈরতন্ত্রের নির্যাতনের শিকার।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন