মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান দেশগুলোর জোট আসিয়ানের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক শান্তি চুক্তি তত্ত্বাবধান করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সাংবাদিকদের হাসান বলেন, এই চুক্তি প্রত্যক্ষ করতে ট্রাম্প ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর সফর করবেন।
তিনি আরও জানান, “শীর্ষ সম্মেলনের সময় আমরা আশা করছি, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তি ও যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ‘কুয়ালালামপুর চুক্তি’ নামে একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা স্বাক্ষরিত হবে।”
৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হবে। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন সংলাপ অংশীদার উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেবেন কি না, তা স্পষ্ট ছিল না। একইভাবে তিনি আগামী সপ্তাহান্তে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনেও অংশ নেবেন কি না, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি দেননি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, ট্রাম্পের আসিয়ানে অংশগ্রহণ নির্ভর করছে এই ব্লকটি তার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি অনুষ্ঠান আয়োজন করবে কি না তার উপর।
খবরে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প চীনা কর্মকর্তাদের ওই অনুষ্ঠানে অংশ না নিতে অনুরোধ করেছেন। যদিও থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় চীন এবং মালয়েশিয়া উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
জুলাই মাসে থাই-কম্বোডিয়ান সীমান্তের অচিহ্নিত অংশ নিয়ে পাঁচ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা নেওয়ার কৃতিত্ব ট্রাম্প নিজেই দাবি করেন। ওই সংঘাতে অন্তত ৪৩ জন নিহত এবং তিন লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
প্রায় ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) দীর্ঘ সীমান্তটি এখনও একাধিক অনির্ধারিত এলাকায় বিভক্ত, যা অতীতেও দুই দেশের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের কারণ হয়েছে। যুদ্ধবিরতির পরও সীমান্তের কিছু বিতর্কিত অঞ্চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংঘর্ষ চলেছিল।
চলতি বছরের শুরুতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এই সংঘাতের অবসানে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ট্রাম্পকে ‘বিশ্ব শান্তিতে ঐতিহাসিক অবদানের জন্য’ নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।
থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার ধরন মধ্যপ্রাচ্যে তার কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডেরই প্রতিফলন। সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতেও তিনি নিজেকে মূল স্থপতি হিসেবে দাবি করেছেন।
গতকাল সোমবার মিশরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ট্রাম্প প্রায় ২০টি দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈশ্বিক শান্তি উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন, যেখানে তার উপস্থিতি ছিল কার্যত কেন্দ্রবিন্দু।
সূত্র: আল-জাজিরা
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন