ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই নরওয়ের অসলোতে অবস্থিত ভেনেজুয়েলার দূতাবাস আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দূতাবাস বন্ধের বিষয়ে ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানানো হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেসিলি রোয়াং বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার দূতাবাস আমাদের জানিয়েছে, তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করছে, তবে এর কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। এটি দুঃখজনক। মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও নরওয়ে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যেতে চায়।’
রোয়াং আরও জানান, নোবেল পুরস্কার প্রদান প্রক্রিয়া নরওয়েজিয়ান সরকারের থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়।
এদিকে সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেল থেকেই অসলোতে ভেনেজুয়েলা দূতাবাসের ফোন লাইন বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া স্থানীয় দৈনিক ভার্ডেনস গ্যাং-এর তথ্যমতে, সন্ধ্যার পর এএফপি প্রতিনিধিরাও নিশ্চিত করেছেন যে দূতাবাসের ফোন নম্বরগুলো বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাচাদোর নোবেল জয় ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
গত ১০ অক্টোবর মাচাদোকে গণতান্ত্রিক অধিকার ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার রূপান্তরে ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
মাচাদো, যিনি বিরোধী দল ভেন্তে ভেনেজুয়েলা-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা, দীর্ঘদিন ধরে মাদুরোর তীব্র সমালোচক। তিনি একাধিক সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং প্রশাসনকে ‘একনায়কতান্ত্রিক শাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনে মাদুরোর ‘জালিয়াতিপূর্ণ বিজয়’-এর অভিযোগের পর মাচাদো দাবি করেন, ‘বিরোধী প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেজ-ই প্রকৃত বিজয়ী।
দেশের ভেতরে ক্রমবর্ধমান দমননীতির মুখে গত আগস্টে আত্মগোপনে যান মাচাদো। সম্প্রতি এএফপিকে মাচাদো বলেছেন, ‘মাদুরোর সময় শেষ। তার এখন ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
মাচাদো আরও জানান, তিনি দেশের স্বার্থে যেকোনো ভূমিকায় কাজ করতে প্রস্তুত এবং গঞ্জালেজ তাকে সম্ভাব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
নরওয়ের ভূমিকা
উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে নরওয়ে মাদুরো সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে। বার্বাডোসে অনুষ্ঠিত আলোচনার ফলস্বরূপ ২০২৪ সালে স্বাক্ষরিত বার্বাডোস চুক্তি শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়।
দূতাবাস বন্ধের এ সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক মহল কূটনৈতিক উত্তেজনার নতুন ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন