রেকর্ড দামে ওঠার একদিন পরই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছানোর পর আজ মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার প্রবণতায় স্বর্ণের দাম ২ শতাংশের বেশি কমে যায়। খবর রয়টার্স।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ২৫৬ ডলার ১৯ সেন্টে নেমে আসে। আগের দিন এটি সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ ডলার ২১ সেন্টে পৌঁছেছিল।
এদিকে ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ ফিউচারের দামও ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ২৬৯ ডলার ৬০ সেন্টে লেনদেন হয়।
উইজডমট্রির পণ্যবিশেষজ্ঞ নিতেশ শাহ বলেন, স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে, তবে দাম বাড়ার গতি এখন অনেক দ্রুত। ফলে নতুন উচ্চতা ছোঁয়ার পরপরই স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা সংশোধন আসছে।
ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অব্যাহত স্বর্ণ ক্রয়, বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী চাহিদা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৬৩ শতাংশ।
এখন বাজারের দৃষ্টি শুক্রবার প্রকাশিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যসূচক তথ্যের দিকে। সেপ্টেম্বর মাসে মুদ্রাস্ফীতি ৩.১ শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ফেডারেল রিজার্ভ আগামী সপ্তাহে সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমাতে পারে বলে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন। সুদের হার কমলে স্বর্ণের মতো সুদবিহীন সম্পদের চাহিদা বাড়ে।
এদিকে মঙ্গলবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমার সম্ভাবনা এবং জাপানে সানায়ে তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খবরে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউানোভো বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী এখনও স্বর্ণের সাম্প্রতিক উত্থানে অংশ নেননি। তারা দাম সামান্য কমলে বিনিয়োগে প্রবেশ করতে চাইবেন, যা স্বর্ণের বড় পতন ঠেকিয়ে রাখবে।
অন্যদিকে, রুপার দাম প্রায় ৪.৩ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৫০ ডলার ৩১ সেন্টে, প্লাটিনাম ৩.৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৮৩ ডলার ৩৮ সেন্টে এবং প্যালাডিয়াম ৪.৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪৩০ ডলার ০৪ সেন্টে নেমে এসেছে।
ট্রেডার ও বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে লন্ডনের স্পট মার্কেটে রুপার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মূল্যবান ধাতুর বাজারে তারল্য সংকট কিছুটা কমেছে।
দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪ টাকা।
এদিকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ২০৫ টাকায়। যা দেশের ইতিহাসে এক ভরি রুপার সর্বোচ্চ দাম। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০২ টাকায়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন