আবারও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকে আলোচনার বিষয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার জন্য পুতিনকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার না করার ব্যাপারে সতর্ক করল পোল্যাল্ড। আকাশসীমা ব্যবহার করলে পুতিনকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারিও দিলেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোসলাও সিকোরস্কি।
হাঙ্গেরিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক। তবে কূটনৈতিক মহলে এখনো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—আদৌ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ হবে? অনেকের মতে, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে হতে পারে দফারফা। আবার অনেকের মতে, বৈঠক শুধুই লোক-দেখানো। তবে সেই বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগেই তাকে সতর্ক করল মধ্য ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড। সিকোরস্কি আশাবাদী, সতর্ক বিষয়ে রুশ প্রশাসন অবগত। সেই কথা মাথায় রেখেই পুতিনের যাত্রাপথ ঠিক করবে তারা।
তবে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রয়টার্স জানায়, হাঙ্গেরিতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলে পুতিনকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দিতে প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ জর্জিভ। অবশ্য গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন। সেখানে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ সমাপ্ত করার জন্য মধ্যস্থতা করতে পারেন।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোসলাও সিকোরস্কি রেডিও রডজিনাকে বলেন, ‘আমি গ্যারান্টি দিতে পারি না যে একটি স্বাধীন পোলিশ আদালত সরকারকে এমন কোনো বিমান নামিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেবে না। তাই যদি এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, আশা করি, আগ্রাসনের শিকার দেশগুলোর অংশগ্রহণে বিমানটি ভিন্ন একটি রুট ব্যবহার করবে।’
২০২২ সালে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আইসিসি। অভিযোগ, ইউক্রেন থেকে শত শত শিশুকে অবৈধভাবে বিতাড়ন করেছিলেন পুতিন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওয়ারেন্ট অনুসারে, পুতিন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ভূখণ্ডে পা রাখলে তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য দেশের তুলনায় রাশিয়ার সঙ্গে তুলনামূলকভাবে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। বুদাপেস্ট জানিয়েছে, পুতিন যেন শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করতে পারেন এবং নিরাপদে দেশে ফিরে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
ইউক্রেনের আকাশসীমা এড়াতে রাশিয়ান প্রতিনিধিদলকে অন্তত একটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হবে। যদিও ইইউ’র সব সদস্য রাষ্ট্রই আইসিসির সদস্য, হাঙ্গেরি বর্তমানে সেই সদস্যপদ থেকে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী জর্জিভ ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারলে তার দেশ পুতিনকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘যদি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বৈঠক আয়োজনই শর্ত হয়, তবে সম্ভাব্য সব উপায়ে সেই বৈঠককে বাস্তবায়ন করাই সবচেয়ে যুক্তিসংগত পদক্ষেপ।’
তবে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিমান ভ্রমণের অনুরোধ তারা পায়নি।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন