২৮ দফা থেকে কমিয়ে ১৯ দফায় আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আলোচনার পর পরিকল্পনায় এই পরিবর্তন আনা হয়। মূল খসড়ার কয়েকটি বিতর্কিত প্রস্তাব নিয়ে কিয়েভ ও ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে আগেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জেনেভায় আলোচনার পর ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাটি ২৮ দফা থেকে কমিয়ে ১৯ দফায় আনা হয়েছে বলে সোমবার মার্কিন ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা জেনেভা বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে মন্তব্য করলেও প্রস্তাবটি এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানান।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে, তবে এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের এক যৌথ বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, বৈঠকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ হয়েছে।
আলোচনায় অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তি ফিনান্সিয়াল টাইমসকে জানান, আগের খসড়া থেকে ৯টি প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনগুলো বাদ গেছে তা তারা জানাননি।
ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আগে থেকেই কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন, বিশেষ করে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও জব্দ করা রুশ সম্পদের ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা কী হবে বা কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা ইইউয়ের এখতিয়ারভুক্ত। সে বিষয়টিও তারা উল্লেখ করেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব শান্তি পরিকল্পনা থেকে দফা কমানোকে ‘এক ধাপ অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি বলেন, সামনে এখনো বেশ কয়েকটি বড় জটিলতা রয়ে গেছে।

সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ২৮ দফা পরিকল্পনাটি জেনেভাতে আলোচনা হয়েছে। সেখানে ওয়াশিংটন, কিয়েভ এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বিস্তারিত পর্যালোচনা করেছেন।
শনিবার ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রণীত এই পরিকল্পনাটি তার ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ নয়। খসড়া অনুযায়ী, ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে আরও কিছু এলাকা ছাড়তে হতে পারে, সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে হতে পারে এবং ন্যাটোতে যোগদানের প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যাগ করতে হতে পারে। শান্তি পরিকল্পনার বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন ট্রাম্প।
পরে জেলেনস্কি বলেন, আমরা কি ‘আমাদের মর্যাদা হারানোর ঝুঁকি নেব, নাকি গুরুত্বপূর্ণ একটি মিত্রকে হারানোর ঝুঁকি নেব’, আমাদের সামনে এখন সেই কঠিন সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করছে।
এছাড়া গত শনিবার ৯ টি ইউরোপীয় দেশ, জাপান, কানাডা এবং ইইউয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, ইউক্রেনের সামরিক শক্তি সীমিত করার প্রস্তাব দেশটিকে ভবিষ্যৎ হামলার মুখে ফেলে দেবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন