তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজপথে নেমে এসেছে দেশটির হাজার হাজার মানুষ। ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে রাজনৈতিক বন্দীদের পরিবার এবং বিভিন্ন আদর্শিক পটভূমির কর্মীরা একত্রিত হন। সমাবেশ থেকে কারারুদ্ধ সকল রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তির দাবি করা হয়।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, বিক্ষোভে ২ হাজারের বেশি মানুষ কালো পোশাক পরে অংশ নেন। এ সময় তারা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।স্লোগানের মধ্যে রয়েছে, ‘জনগণ শাসনব্যবস্থা উৎখাত করতে চায়’, ‘কি দুর্দান্ত দেশ! নিপীড়ন ও অত্যাচার!’ এবং ‘ভয় নেই, সন্ত্রাস নেই, রাজপথ জনগণের।’
বিক্ষোভটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার বিরুদ্ধে দেশের বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা বিচার বিভাগে প্রেসিডেন্ট সাইদের হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য পুলিশের ব্যবহারকেও নিন্দা জানান।
শনিবারের বিক্ষোভ আয়োজক আইয়ুব আমারা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই পদযাত্রার লক্ষ্য রাজনৈতিক মতের জন্য কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের দুর্দশা তুলে ধরা।’
কারাবন্দী বিরোধী নেতা আবদেলহামিদ জলাসির স্ত্রী মোনিয়া ব্রাহিম জানান, তিনি পদযাত্রায় যোগ দিয়েছেন, কারণ বহু তিউনিসিয়ান ‘গভীর অবিচারের সম্মুখীন’। তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক বন্দীরা তাদের নীতি, নাগরিক ও রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য কারাগারে রয়েছেন। তারা প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থার হাতে জিম্মি।’
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কিছু আটককৃত বর্তমানে অনশনে আছেন। এর মধ্যে সাংবিধানিক আইনের অধ্যাপক জওহর বেন এমবারেকও রয়েছেন, যিনি ২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ধর্মঘট করছেন।
বেশ কয়েকটি অধিকার গোষ্ঠী তিউনিসিয়ায় ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষের দিক থেকে রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক ও কর্মীসহ ৫০-এর বেশি মানুষ নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। গোষ্ঠীটি সতর্ক করেছে, ভিন্নমতকে অপরাধী ঘোষণা করার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী ও সাইবার অপরাধ আইন ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাইদ ২০২১ সালের জুলাইয়ে সংসদ স্থগিত করে এবং সকল ক্ষমতা একীভূত করেন। তিনি দাবি করেন যে তার পদক্ষেপগুলো দুর্নীতির মূলোৎপাটন, ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ নির্মূল এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয়।

