চিন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান উত্তেজনা অবশেষে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। শনিবার চিন ন্যাশনাল আর্মি (সিএনএ) হঠাৎ হামলা চালিয়ে চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (সিএনডিএফ) সদরদপ্তর দখল করে নেয়।
সিএনডিএফের মুখপাত্র সালাই টিমি হুট জানিয়েছেন, মিজোরাম সীমান্তসংলগ্ন রিহলি এলাকায় তাদের ঘাঁটিতে হামলাটি ঘটে এমন সময়, যখন উভয় পক্ষ বিরোধ মীমাংসার আলোচনায় বসেছিল।
গত বছর থেকেই চিন ব্রাদারহুড ও সিএনএ-এর রাজনৈতিক শাখা চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (সিএনএফ) নেতৃত্বে গঠিত চিনল্যান্ড কাউন্সিলের সঙ্গে সিএনডিএফের উত্তেজনা বেড়ে চলছিল।
২০২৩ সালের শেষদিকে গঠিত এই কাউন্সিলে সিএনএফ বা সিএনএ, বহিষ্কৃত চিন এমপি এবং আরও কিছু সরকারবিরোধী ও প্রশাসনিক গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চিন ব্রাদারহুডে ছয়টি দল রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম চিন ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন এবং তাদের সামরিক শাখা সিএনডিএফ।
বিশ্লেষকদের মতে, সিএনএ-এর রিহলি ঘাঁটি দখলের ঘটনা আসলে একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। কারণ এর আগে সিএনডিএফ-এর মিত্র বাহিনী ভারত সীমান্তের কাছাকাছি ফালাম জেলার রিখাওদার শহর দখলে নেয়।
সালাই টিমি হুট জানান, হামলার দিনই সিএনএ-এর বড় একটি বাহিনী সিএনডিএফ-এর সদরদপ্তরে পৌঁছে যায় এবং তা দখল করে নেয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিএনএ-কে থামাইনি, কারণ ভেবেছিলাম তারা আমাদের সঙ্গে বা সিডিএফ-হুয়ালঙ্গোরামের আঞ্চলিক বিরোধে জড়িত নয়। তারা আসার পর আমাদের চিফ অব স্টাফ তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এমনকি আমরা তাদের জন্য দুপুরের খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখনই তারা আমাদের অজান্তে সদরদপ্তর দখল করে নেয় এবং আমাদের আটকে ফেলে।’
তিনি আরও জানান, সিএনএ-এর আরেকটি দল এখন চিন ব্রাদারহুড-নিয়ন্ত্রিত ফালাম শহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে ফালাম শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরের থলানরান গ্রামে সিএনএ সৈন্যদের দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই বিষয়ে সিএনএ মুখপাত্র সালাই হেট নির মন্তব্য জানতে দ্য ইরাবতী যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া দেননি। তবে তিনি স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রিখাওদার শহরে যাওয়ার পথে সিএনডিএফ সদরদপ্তরের কাছে তারা কিছু সময়ের জন্য যোগাযোগ করেছিল।
সালাই টিমি হুট বলেন, ‘আমরা যখন আলোচনায় ছিলাম, ঠিক তখনই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, চিন ব্রাদারহুড চাইলে এই সংঘর্ষে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
চিন জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন এখন অস্ত্রধারী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসন করতে হবে।
গত রোববার মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ‘চিন অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফর পিস’ সিডিএফ-হুয়ালঙ্গোরাম এবং সিএনডিএফ-এর মধ্যে আলোচনার মধ্যস্থতা করেছিল। তবে সেই আলোচনা কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়।
একজন চিন বিশ্লেষক বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের একসঙ্গে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা। অথচ এখন নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যা সাধারণ মানুষের ত্যাগ ও কষ্টের প্রতি অসম্মান দেখানোর নামান্তর।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই পক্ষকে অবশ্যই মিজোরামের শান্তি উদ্যোগের অধীনে জরুরি ভিত্তিতে আবার আলোচনায় বসতে হবে।’

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন