ইন্দোনেশিয়ায় সংসদ সদস্যদের বিলাসবহুল বেতন-ভাতা প্রদানের প্রতিবাদে রাজধানী জাকার্তার রাজপথে নেমে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। এরইমধ্যে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। ফলে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে আন্দোলন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার হাজারো শিক্ষার্থী সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন এবং আতশবাজি ফোটান। বিক্ষোভ চলাকালে একটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়। তবে হতাহত কিংবা গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনকে ঘিরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা, যেখানে বলা হয়েছে—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দেশটির পার্লামেন্টের ৫৮০ জন সদস্য মাসিক ৫০ মিলিয়ন ইন্দোনেশীয় রুপিয়া (প্রায় ৩ হাজার ৭৫ ডলার) আবাসন ভাতা পাচ্ছেন।
এ ভাতা ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ নাগরিকের আর্থিক দুরবস্থার প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ অন্যায্য বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু এই আবাসন ভাতাই দেশটির দরিদ্র অঞ্চলের মাসিক ন্যূনতম মজুরির প্রায় ২০ গুণ বেশি।
বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক ‘গেজায়ান মেমাঙ্গগিল’ নামের একটি সংগঠন জানিয়েছে, তাদের মূল দাবি সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা কমানো। এছাড়া তারা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত এলিট শ্রেণি’, বড় ব্যবসায়ী ও সামরিক বাহিনীকে সুবিধা দেওয়া সরকারি নীতির বিরুদ্ধেও আন্দোলন করছে।
স্থানীয় টেলিভিশনে দেখা গেছে, কিছু বিক্ষোভকারী জনপ্রিয় জাপানি মাঙ্গা সিরিজ ওয়ান পিস–এর পতাকা ওড়াচ্ছেন, যা এখন ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র আদে আরি শ্যাম ইন্দ্রাদি জানিয়েছেন, সংসদ ভবনের নিরাপত্তায় এক হাজার ২৫০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদের স্পিকার পুয়ান মহারানির কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গত শনিবার মহারানি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা যথাযথভাবে বিবেচনা করে এবং জাকার্তার বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সমন্বয় করেই নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি একটি বড় সমস্যা। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দেশটির পুলিশ ও সংসদ সদস্যরা সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন