নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারে তিন নতুন মন্ত্রীর দায়িত্ববণ্টন ও শপথ গ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল তাদের শপথ পাঠ করান। প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় যোগ দিলেন তারা ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে হিমালয়ান টাইমস।
নতুন মন্ত্রীরা হলেন— অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রামেশ্বর প্রসাদ খানাল।তিনি দেশটির সাবেক অর্থসচিব। কেপি শর্মা ওলি সরকারের কাছে সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ৪৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন তিনি।
কুলমান ঘিসিংয়ের কাঁধে উঠেছে, জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ; ভৌত অবকাঠামো ও পরিবহন ও নগর উন্নয়ন।তিনি দেশটির বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে লোডশেডিং কমিয়ে জনআস্থা অর্জন করেছিলেন। তবে ওলি সরকার তাকে সরিয়ে হিতেন্দ্র দেব শাক্যকে বসায়, যা জনরোষ সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র এবং আইন, বিচার ও সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী হয়েছেন ওম প্রকাশ আর্যাল।তিনি সুপ্রিম কোর্টে লোকমান সিং কার্কিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান করার বিরুদ্ধে রিট দায়ের করে আলোচনায় আসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলায় লড়াই করছেন এবং কাঠমান্ডু মহানগর করপোরেশনের আইন উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি নিজ দায়িত্বে শিল্প, বাণিজ্য ও সরবরাহসহ পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় রেখেছেন। তিন মন্ত্রীর শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সুশীলা কার্কি নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রসারিত হলো। রোববার সকালে কার্কি মন্ত্রিসভা গঠনের আলোচনা শুরু করেন কার্কি।
দুর্নীতি, সরকারবিরোধী নিপীড়ন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাস্তায় নেমে আসে নেপালের তরুণ সমাজ। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং গুলি ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন শহরে জারি করা হয় কারফিউ।
তবে আন্দোলনকারীরা দমে না গিয়ে পরদিনও বিক্ষোভ চালিয়ে যান। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। এদিন বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। নেপালের সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৭২ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় গত ১২ সেপ্টেম্বর নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি। জেন জি আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।