ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

৯৩ বছর বয়সে মারা গেলেন থাইল্যান্ডের রাজমাতা সিরিকিত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০২:৩১ পিএম
রাজমাতা সিরিকিত। ছবি- সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মা রানি সিরিকিত মারা গেছেন। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২১ মিনিটে রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে সিরিকিত মারা যান বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে থাই রয়্যাল হাইসহোল্ড ব্যুরো। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

রানি সিরিকিত ২০১৯ সাল থেকে শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে চলতি মাসে তাঁর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

দীর্ঘ ৬ দশকের বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডে রানি ছিলেন সিরিকিত। তিনি দেশটিতে সবচেয়ে বেশি সময় সিংহাসনে থাকা রাজা ভূমিবল আদুলাদেজের স্ত্রী। ২০১৬ সালে রাজা ভূমিবল মারা যান। এরপর সিংহাসনে বসেন তাঁদের ছেলে মহা ভাজিরালংকর্ন।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রয়াত মায়ের জন্য রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনে থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজা ভাজিরালংকর্ন। রানি সিরিকিতের মরদেহ ব্যাংককের রাজপ্রাসাদের দুসিত থোর্ন হলে সমাহিত করা হবে। রাজপরিবারের সদস্যরা এক বছরের শোক পালন করবেন।

 

বুকে ছবি নিয়ে শোক প্রকাশ এক থাই নাগরিকের।

রানি সিরিকিতের মৃত্যুতে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাঁর মালয়েশিয়া সফর বাতিল করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁর কুয়ালালামপুর যাওয়ার কথা ছিল।

সিরিকিতের বাবা ছিলেন ফ্রান্সে থাই রাষ্ট্রদূত। ফলে প্যারিসের সঙ্গীত স্কুলে পড়াশোনা  করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। সেখানেই রাজা ভূমিবলের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়।

১৯৮০ সালে বিবিসির একটি তথ্যচিত্রে ভূমিবলের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার দিনের স্মৃতিচারণা করেছিলেন সিরিকিত। মজা করে বলেছিলেন, প্রথম দেখায় ভূমিবলকে তাঁর একটুও ভালো লাগেনি। কারণ, ভূমিবল দেরি করে এসেছিলেন। বিকেল চারটায় আসার কথা থাকলেও ভূমিবল সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করিয়েছিলেন।

ভূমিবল ও সিরিকিত। ছবি- সংগৃহীত

এ যুগল ১৯৫০ সালের ২৮ এপ্রিল বিয়ে করেন। ষাটের দশকে তরুণ রাজকীয় দম্পতি হিসেবে বিশ্বভ্রমণ করেন ভূমিবল–সিরিকিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার, ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তারকা এলভিস প্রিসলি প্রমুখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। ওই দশকজুড়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের সেরা পোশাকের জন্য আলোচনায় ছিলেন সিরিকিত।

সিরিকিতকে খুবই সম্মান করেন থাইল্যান্ডের মানুষ। দেশটিতে ১২ আগস্ট তাঁর জন্মদিনকে ‘মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ২০১২ সালে স্ট্রোক করেছিলেন সিরিকিত। এরপর থেকে তাঁকে জনসমক্ষে খুব কমই দেখা গেছে। তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।