ঢাকা মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী নীতি সমালোচনায় চীন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
আধিপত্যবাদ ও ‘বুলিং’-এর বিরুদ্ধে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আধিপত্যবাদ ও ‘বুলিং’-এর (ক্ষমতাবান দেশের দমন নীতি) বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, আধিপত্যবাদ শুধু দেশগুলোকে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং সহিংস প্রতিযোগিতা ডেকে আনে।

এই মন্তব্য তিনি করেছেন লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে, যেখানে তিনি চীনের পক্ষ থেকে সংহতি এবং আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।

শুল্কযুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না 

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেই শি বলেন,  ‘শুল্কযুদ্ধ কিংবা বাণিজ্য যুদ্ধ কারো জন্যই বিজয় বয়ে আনে না। আধিপত্যবাদ কেবল আত্মবিচ্ছিন্নতার পথ দেখায়।’

তার এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে একে-অপরের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই পদক্ষেপকে অনেকেই দেখছেন উত্তেজনা প্রশমনের সম্ভাব্য সূচনা হিসেবে।

লাতিন আমেরিকায় চীনের প্রভাব বাড়ানোর কৌশল

বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত চতুর্থ চীন-সিলাক ফোরামে বক্তব্য রাখেন শি। ২০১৪ সালে গঠিত এই ফোরামের লক্ষ্য লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘকালীন প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং চীনের প্রভাব বাড়ানো।

শি জানান, ‘চীন, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল গ্লোবাল সাউথে এর শক্তিশালী অংশ। আমাদের ঐতিহ্য হলো স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতা। আমাদের অধিকার উন্নয়ন ও পুনরুত্থান।’

চীনের সঙ্গে সিলাকভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য ২০২৩ সালে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। শুধু ব্রাজিল থেকেই চীন কিনেছে সয়াবিন রপ্তানির ৭৩ শতাংশ।

৯.২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা ঘোষণা

চীন ঘোষণা দিয়েছে, সিলাকভুক্ত দেশগুলোকে ৬৬ বিলিয়ন ইউয়ান বা প্রায় ৯.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে। এই ঋণ চীনা মুদ্রা ইউয়ানে প্রদান করা হবে, যাতে ওই অঞ্চলে ইউয়ানের ব্যবহার বাড়ে এবং মার্কিন ডলারের বিকল্প তৈরি হয়- এমনটাই বিশ্লেষকদের মত।

ভূরাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট

এই ভাষণের মধ্য দিয়ে শি জিনপিং আবারও জানিয়ে দিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘একতরফা আধিপত্য’ থেকে বিশ্ব দক্ষিণ (গ্লোবাল সাউথ) বেরিয়ে এসে চীনের নেতৃত্বে এক নতুন মেরু গঠনের পথে হাঁটছে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, একতরফা সিদ্ধান্ত ও রক্ষণশীল নীতি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের সঙ্গে চীন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলবে।’